পূবদিক থেকে আসছে বিকেলের রোদ
পশ্চিমে সকাল হবে কাল
সামনে এক মরুভূমি। বালুওড়া টিলা--দূরে
নেমে গেছে দিগন্তের ঢাল।

তার মধ্যে মস্ত এক বাড়ি। ছাদে, স্বচ্ছ সরোবর।
কার্নিশে কার্নিশে গাছ। লতাপাতা। দূর দেশের পাখি।
সামনে একটা ডেক চেয়ার। ওলটানো টেবিল। মেঝেতে
                                        শীতলপাটি পাতা।
ঘুরেফিরে খেলা করছে কয়েকটি উন্মাদ ছেলেমেয়ে।

একটু দূরে গৃহকর্তা জড়ানো ধুতির খুঁট গায়ে
দেখছেন নিজের দুটিকে :
ওই মেয়েটা, বিয়ে হলো না ওর।
ষাট বছর পার করেও সবসময় ভয় পেতো খুব।
মানসিক হাসপাতালে মরে শেষে এখানে এসেছে।
ছেলেটা অনেকদিন লোক চিনতে পারতো না ঠিক।
একমনে কাগজ ছিঁড়ত। পঞ্চাশ পেরিয়ে তবে এবাড়িতে
                                                        এল।
দেরী একটু হলো, ঠিকই। এইবার বেশ কাটবে অবসরজীবন।

জীবন?
     এ ভদ্রলোক কবিতা লিখতেন জীবৎকালে ।
এখন কেবল পিতা । মানসিক সাম্যহারা
             ভর ও ওজনহারা পুত্রকন্যাদের সঙ্গে তাই
খেলে বেড়াচ্ছেন এই ছাদে, ওই ডুবতে থাকা সূর্যের উপরে
হেঁটে বেড়াচ্ছেন, ওই যে বলছেন : আয় আমরা
                উনিশশো অনন্তে উড়ে যাই....


(প্রকাশিতঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, শারদীয়া ১৪০৪)