বহুতল ব্যালকনির নতুন অতিথি
ফুটফুটে এক গোলাপ চারা.
চকচকে পাথরের মেঝেতে শীতের রোদ পোহায়,
উদাস চোখে আকাশ খোঁজে,বন্ধু আকাশ.
সে আকাশও আজ বন্ধু বদলেছে.
আজকাল সে মাল্টিপ্লেক্সের সাথে লুকোচুরি খেলে.
কদিন হলো,
নীল রেলিং ঘেঁসে ভাব জমিয়েছে কৃষ্ণচূড়ার ডাল.
দেখে মনে হবে-
সদ্য সদ্য প্রেম হয়েছে কাল.
শিশির ভেজা কৃষ্ণচূড়া সকালের রোদ মেখে খেলতে আসে চারার সাথে.
গা ঝাঁকিয়ে বৃষ্টি নামায়, কেবল দুজন মিলে ভেজে.
ঝরা পাতার লজ্জা গায়ে যেদিন কৃষ্ণচূড়া কথা বলেনা,
গোলাপ চারার সেদিন কান্না পায়.
দুহাত বাড়ায়,বন্ধু চায়
শুকনো ডালে হাত বুলিয়ে কাছে ডাকে.
পাগল প্রেমিক ,কতই বা আর দূরে থাকে.
চারার তখন যৌবনে পা,লাল গোলাপের গন্ধ মেখে বিভোর বাতাস.
ঠিক তখনই,কৃষ্ণচূড়ায় বসন্ত দেয় একটু আভাস.
এমন আগুন রঙ্গা রূপ দেখেনি গোলাপ আগে!
শরীর জুড়ে আগুন,শুধু আগুন জাগে. কৃষ্ণচূড়াও গন্ধে মাতাল.
বহুতলের বাগানবাড়ী,আকাশের অনেক কাছে.
সদ্য ফোটা রক্ত গোলাপ আগুন ছুঁয়ে দিব্যি আছে .
দিব্যি আছে বাউল ভ্রমর গুনগুনিয়ে প্রেমের গানে.
ছোট্ট পাখির নতুন বাসা,সেও তো দিব্যি আছে এই একচিলতে কুঞ্জবনে.
তখন বসন্তের যাবার পালা,আগুন রঙ্গে বিষাদ ছুঁলো.
গোলাপ চারাও একটু উদাস,শুকিয়ে গেছে পাঁপড়ি গুলো.
তবুও প্রেম কমেনি,সকাল বিকেল কৃষ্ণচূড়ার নিবিড় ছোঁয়া.
কচি পাতায় সাজিয়ে শরীর,রেলিং ঘেঁসে আলতো নোয়া-
চলছিলো,বেশ চলছিলো.
একদিন,বাড়ীর মালিক খেয়াল মাফিক পুরানো চারা সরিয়ে দিলো.
কৃষ্ণচূড়া দিশাহারা.
গ্রীষ্ম গেলো,বর্ষা এলো
কৃষ্ণচূড়া ভিজলো একা-
ভিজলো একা রিক্ত ডালে ছোট্ট পাখি সঙ্গীহীন.
কুঞ্জবনের গুঞ্জরনে আসলো না আর প্রেমের দিন.