বৃদ্ধাশ্রম
আমার সেই ছোট্ট খোকা , ছোট্ট দুটি হাতে -
কুঁকড়ে মুখ, শাড়ির ভিতর,
ইস্কুলের দরজাতে,
পড়ন্ত বেলায়, শিকড়ের টানে
আজও মনে পড়ে I
খেলতে গিয়ে পড়ে, খোকার ; সে কি কান্না I
বুকে জড়িয়ে আমি বলেছিলাম ;
কিছছুটি আর হবে না I
খোকা আমার, পড়ায় ভালো ; দিতাম জ্ঞানের আলো I
মাধ্যমিকে পুরস্কার পেয়ে , সে কলেজ গেল I
শুনতে হলো আমায় পরে , তুমি বেশি জানো ?
জানি কম বুঝি বেশি , তা সে হোক ভালো I
কলেজে ডিগ্রি নিয়ে,খোকা , বিদেশ ভূঁইয়ে গেল –
হলো স্কলার খোকা আমার ; বড় চাকরি পেল I
খোকা আমার করেছে বিয়ে, হয়েছে আধুনিক সঙ্গিনী I
তাকে নিয়ে সে বড় খুশি, হয়েছে চির-প্রবাসী I
উঁচু পোস্টে, মোটা মাইনে , খোকার বড় চাকরি I
কি জানি, কি গেরোয় ফেঁসে , আমি হলাম গিয়ে ; বৃদ্ধাশ্রমবাসী I
বছর চারেক হল বটে ,সময় পায় না খোকা I
আর জাগে না মনে ওর , ঘরে ফেরার তাড়া I
এক-আধটু আগে তাও , কথা বলত ফোনে;
ফুটফুটে ছেলেটা আসার পরে ; হয়েছে ব্যস্ত ভীষন সংসারে I
তবু খোকা বড় আমার , সদা খেয়াল রাখে –
১-লা তারিখে, মাসোহারাটা , ঢোকে ঠিক বৃদ্ধাশ্রমে I
তবু যখন আছি বেঁচে , দেখতে বড় ইচ্ছা করে;
আমার খোকা, আগের মতন
দেখতে সে-মন আছে ? !-
সবাই তোরা সুখী হো , এটাই মনে চাই I
শুধু মরার আগে ‘স্বর্গরথের’ খরচাটা ;
অগ্রিম যেন পাই I