তুমি বীরাঙ্গনা!
সাংসারিক সাজে সজ্জিত, ত্রিনয়না-
দুর্গা সমমনা!
দুর্গতি নাশিতে আবির্ভাব তোমার,
এ ধরা ধামে, স্বরূপে বধূ-মাতার!

তুমি বারাঙ্গনা!
শরৎ এর দেবদাস-
আসিত আকণ্ঠ সুরাপানে,
তোমার ঐ গৃহ-প্রাঙ্গণে।
ভুলিবারে যাঁরে-
অহং জ্ঞানে।
ওহে চন্দ্রমুখী-
জৈবিকতা পূরণ হেতু,
সমস্ত উৎসর্গ করতঃ -
সমাজে তুমিই পতিত?

তুমি পবিত্র জানি!
যথা, বহতা পানি-
গঙ্গা সম!
বয়ে নিয়ে যাও-
অশুভ যা পাও,
তোমার স্রোতের কবলে বেঁধে।

ভার্যা রূপে তুমি,
বেহুলা!
রক্ষাহেতু লখিন্দর প্রাণ,
আপন সতীত্ব বলে-
স্বর্গলোকে পৌঁছেছিলে।

আজ্ঞাবহ ভগিনী তুমি,
পুতনা!
করিতে তব দুগ্ধ দান,
শিশু কৃষ্ণেরে!
আপনি পৌঁছে মৃত্যুদ্বারে।

মাতা রূপে তুমি,
দেবকী!
গর্ভে করিলে যাঁরে ধারণ,
যশোদা হয়ে করো পালন।

কন্যা রূপে তুমি,
মনসা!
আপনার প্রতিষ্ঠা পেতে,
বাধ্য করো পূজা প্রস্তুতে-
চাঁদ সদাগর শিবভক্তে।

প্রেমিকা রূপে তুমি,
রাধা!
সামাজিক যতো বাধা,
উল্টে ফেলে সকল-
রীতি-নীতি ধারা,
হয়ে প্রেমিক কৃষ্ণের রাধা।

নারী তুমি এতো রূপে-
রয়েছ সংসারে সঁপে!
করিতে প্রতিপালন-
শুধু এ মানবগণ?
প্রকৃতিরই মতন!
কভু ভোরের স্নিগ্ধতা-
অপরাহ্নে অগ্নিঝরা,
বৈকালিক মনোহরা,
রজনীর নীরবতা।

প্রকৃতির বিচিত্র ছবি চিত্র-
দেখিলে হয় বিমুগ্ধ হৃদয়!

সহিষ্ণু যিনি আয়ুষ্মান,
শ্রীমতীর শ্রী-অভিমান -
মাধুকরী সমান দান,
পায় সেই, যে ভাগ্যবান!
নারীর ঐ চপল চলা-
যেন নৃত্যে নিত্য কি বলা,
বুঝি না তার কিছু, হায়!
হাজারো চক্ষু শুধু চায়।

কেহ প্রণয় আশায়,
কেহ বহু হতাশায়!
আবার,
কেউ ছেকে নেয়,
চাঁদনী রাতের-
চকোরের ন্যায়,
চন্দ্রমুখী সম-
তব সুন্দরতম বারতা!
আর,
সামান্য কবিরা-
লিখে তুষ্ট তাঁরা,
নারী সৌন্দর্যে গীতিকবিতা!
        ----0----