তারপর দিলদারপুর চা বাগানে আমাদের প্রথম মিলন
হাতে হাত, চোখে-মুখে অদ্ভুদ সব আলোকজ্জ্বল নিরন্তর আলো দেয়া সময়
নীল আর সাদায় আমরা একাকার
আমাদের প্রথম বন্ধু লাল পিঁপড়া যাদের খুনসুটিতে চা গাছের পাতার ভেতর থেকে
আমরা উঁকি দিই দিলদারপুরের প্রথম কাঁঠাল চাঁপার বারান্দায়

বলেছিলে কত সুখের কোলাহলে আমরা বেঁচে থাকলে একদিন একাকার হবো, আরও নিবিঢ় আলিঙ্গনে
না তা আর হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না
এখন আমার চোখে চৈত্রের খা খা রোদ্দুর
জমিন ফাঁটা আর্তনাদ যেন বুক চুষে নিচ্ছে সব জল
যেন আর কোনদিন তৃষ্ণা নিবারণ হলো না আমার

অথচ আমরা নীল আর সাদার ভৈববে একদিন দিলদারপুর চা বাগানে পাহারাদারের সীমানা অতিক্রম করেছিলাম ভালোবাসার দাবীতে
সে ভালোবাসা আজ বৈশাখের তপ্ত রোদে শুকানো বইয়ের মলাট
যে মলাটের দুঃসাহসিক পৃষ্ঠার ভেতর করুন আর্তনাদ করে ফেলে আসা জীবনের গতি প্রকৃতি
এখনও বৈশাখে বিদ্যুৎ চমকায়
আর মনে পড়ে কোন এক বৈশাখের বজ্রবিদ্যুতের আকষ্মিক ধাক্কায় আমার বুকের প্রান্ত সীমায় তোমার চিবুকের ঘ্রাণ

মনে পড়ে মনে পড়ে সে ঘ্রাণ আজও ভেসে আসে দুধ পূর্ণিমার কোন রাতে জলের শরীরিরেখায়
ফিরে আসে পদ্মায়,সুরমায়,জামাইকাটা হাওরে, চাউলধনির লাঙ্গলের প্রতিটি ফলায়
ফিরে আসে বড় ভাবির হাতে লাগানো বেড়ার সেই প্রিয় ফুল গাছের প্রতিটি শিরায় শিরায়
সেই ঘ্রাণ যা একদিন বৈশাখের বৃষ্টিতে তোমার চিবুক থেকে পেয়েছিলাম
যা একদিন সেই দিন যেদিন তোমার প্রেমের ঘ্রাণে নিমগ্ন ছিলাম

'আমি কি ডরাই সখি প্রেমের মরন'
সে উচ্চারণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন প্রিয় স্যার
আজ বলছি আমি,কাল আমার স্টুডেন্টস
প্রেম ডরাই'র ঘরে আটকায় না, সময় ফুরিয়ে নেয় তোমাদের প্রতিপোষক হয়ে
আমরা পরম্পরা রয়ে যাই সেসব দ্বিধা ও দীর্ঘশ্বাসের ভেতর অনুশ্চক্রিকার মতো


ষোলঘর,সুনামগঞ্জ
০৭ অক্টোবর ১৮