আমি বিয়েটা করতে চাইনি।
চেয়েছিলাম আরও অনেক শিক্ষিত হতে।বাড়ির সবাই কেন?
আমার বিয়ে নিয়ে চিন্তিত হতে লাগল জানি না।
সুন্দরী তাই!
আমি যদি বলি পড়াশোনা করব,
তবে মা বলে অবশ্যই পড়বে
কিন্তু-
বিয়েটা করে নে!
তার পর দেখা যাবে।
বাবা বলেন – বি.এস.সি পাশ, সুন্দরী
তুমি যথেষ্ট শিক্ষিতা।
এম.এস.সি না হয় শ্বশুর বাড়িতে গিয়েই করবে।
তারপর হঠাত্ এক রবিবারে
কষা খাসির মাংস পাতে ,খেতে বসেছি।
বাবা- সুখবর!
মা- কী?
এত দিনে এক সুযোগ্য পাত্র পেলাম।
আমি সেখানে ডাইনিং টেবিলে বসেই রয়েছি।
আমার থেকে মতামত নেওয়াটা উচিত্ ছিল,
গ্র্যাজুয়েট আমি।
বাবা বলল সে পাত্র তোর জন্যই সৃষ্টি,
পাত্রের মস্ত বড়ো ব্যবসা।
আমি দেরি না করে, একবারে পাকা কথা বলে এসেছি।
তোর ছবি দেখিয়েছি,
সব বলেছি, তেনারা রাজি।
কমতো ছেলে দেখিনী রে!
কিন্তু, এই পাত্র যেন অনন্য,
শ্যামবর্ণ শরীর।
মা বলল ছেলে মানুষের আবার বর্ণ!
আমিও সবার কথা ভেবে রাজি হলাম।
কিন্তু, মনে হত আমি বিয়েটা করতে চাইনি।
আমি আরও শিক্ষিতা হব,
বিয়ের পরে আবার পড়াশোনা হয় নাকি!দিন সময়ের সঙ্গে চলতে লাগল।
বিয়ের কার্ড ছাপা শেষ।
৪ঠা অগ্রহায়ণ বিয়ে, ইংরেজির ২০য় নভেম্বর।
চারিদিকে সানাইয়ের সুর,দিনটা উপস্থিত।পিরিতে করে,
ছাদনা তলায়,আমাকে নিয়ে যাওয়া হল।
আমার মুখ বড়ো দুটো পানে ঢাকা।
মনের গভীরে কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছে,
এর আগে অবশ্য তার ফটো দেখেছি, ফোনে সামান্যকথাও হয়েছে।
সাত পাকে ঘুরিয়ে,
আমাকে তার সামনে দাঁড় করাল।
আমি তখনও পান পাতাটা সরাই নি,
পিরির উপরে বসে।
পান পাতাটা সরাতেই, অস্বস্তিটা অনেক বেড়ে গেল।
আমি পিরির উপর থেকে নামার চেষ্টা করতে লাগলাম।
বাবাকে বললাম, তুমি এই সর্বনাশটা করতে পারলে।
আমিতো বিয়ে করতে চাইনি!
ছেলেটা কী করে দাড়িয়ে আছে,
তুমি না বলেছিলে ও আমার মতো
কিন্তু, ও তো আমার মতো নয়।
ছেলেটি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে,
চারিদিকে কোলাহল।
ছেলেটি বলল আমি তোমার মতোই-
তুমি পা দিয়ে এই পৃথিবীতে বিচরণ করতে পার না,
আমিও ঠিক হাত দিয়ে পৃথিবীকেস্পর্শ করতে পারি না।
ভগবান যেমন তোমাকে পা দিয়েছে
কিন্তু সেটা অচল।
আমার হাতটা ঠিক সেই রুপ।
আমরা পারি না!
দুজনে মিলে এই অসমাপ্তশরীরটা পূর্ণ করতে।
কিন্তু , আমি বিয়েটা করতে চাইনি।
বাবা বিয়েটা দিয়ে কোন ভুল করেনি,
সেটা আমি বুঝতে পেরেছি।
আমি আর ও এখন খুব সুখীএকটা ছেলে হয়ছে,
পাঁচ বছর হল।
সে আমাদের মতোই হয়েছে!
কিন্তু সে দৌড়াতে পারে, আবার বল ছুঁড়তে ও পারে।।