একদিন কোন এক আঞ্জির গাছের ডালে সকালের রোদের ভিতর
সোনালি সবুজ এক ডোরাকাটা রাক্ষুসে মাকড়কে আমি
একটি মিহিনসুতো নিয়ে দুলে নির্জন বাতাসে
দেখেছি স্বর্গের থেকে পৃথিবীর দিকে এল নেমে,
পৃথিবীর থেকে ক্রমে চলে গেল নরকের পানে;
হয়তো সে ঊর্ণনাভ নয়।
অগস্ত্যের মতো নানা আয়ুর সন্ধানে
চোখে তার লেগে ছিল ব্রহ্মার বিস্ময়।
ঢের আগেকার কথা এই সব- তখন বালক আমি পৃথিবীর কোণে।
অশ্বত্থের ত্রিকোণ পাতায় যেন মনে হত বালিকার মুখ
মিষ্টি হয়ে নেমে আসে হৃদয়ের দিকে,
নদীর ভিতরে জলে যেন তার করুণ চিবুক
স্থিরতর কথা ভাবে- সমস্ত নদীর ঘ্রাণ আরো
অধিক উদ্ভিদ মাটি মাংস- ধূসর হয়ে থাকে;
যেন আমি জলের শিকড় ছিঁড়ে একদিন হয়েছি মানুষ,
কাতর আমোদ সব ফিরে চায় আবার আমাকে।
পৃথিবীর ঘরে তবু ফিরে গিয়ে- অভিভাবনায়
সেগুন কাঠের শক্ত টেবিলের ‘পরে
নীরবে জ্বেলেছি আলো ছিপছিপে ধূর্ত মোমের
তবুও যখন চোখ নেমে এল বইয়ের ভিতরে
এক- আধ- দুই ইঞ্চি ঘুমের ভিতরে ডুবে গেল,
কঠিন দানব এক দাঁড়াল মুখের কাছে এসে-
যেন আমি অপরাধে বিবর্ণ বালক
উলঙ্গ পরীর চুল-কিংবা তার ঘোটকীর লেজ ভালোবেসে।
তবুও আকাশ থেকে পুনরায়- ধীরে
জলপাই ধূম্র এক ভোরবেলা উদ্গীরিত হলে
সকলের আগে ক্ষুদ্র জাগরূক বর্তুল দোয়েল
তখনো বাতাস পেয়ে জাগে নাই ব’লে
নদীর কিনার দিয়ে শঙ্খচূড় সাপের মতন
আমার এ শরীরের ছায়াকে বাঁকিয়ে নিতে গিয়ে
সহসা দেখেছি তুমি কর্কচের মতন আলোকে
শ্বেতকায়া সাপিনীর মতন দাঁড়িয়ে।