বড় সাধ করে মানুষ দেখতে বেড়িয়েছিলাম আমি,
শুনেছি মানুষ নাকি আদর্শ চরিত্রের অধিকারী,
তারা সৎ পরোপকারী নির্লোভ নিঃস্বার্থ প্রাণি।
তাই আজ প্রভাতেই বেড়িয়েছি মানুষের সন্ধানে,
মাঠে ঘাটে বাজারে শহরে চষে বেড়িয়েছি,
বেড়িয়েছি অফিস আদালত হোটেল রেস্টুরেন্টে।
কোথাও পাইনি শ্রেষ্ঠজীব মানুষের দেখা।
শুনেছিলাম তাদের দু'হাত, দু'পা আছে,
আছে দু'টো কান, সামনে দু'টো চোখ।
কিন্তু কোথায় তারা, দেখতে পাইনে কেনো?
তবে কি ডাইনোসরের মতোই,
বিলুপ্তি ঘটেছে তাদের?
মানুষের আদলে কিছু নরকঙ্কাল দেখেছি আমি,
তাদের চোখে দানবের মতো হিংস্রতা
যেনো দাউদাউ করে জ্বলছে।
মুখ থেকে ঝরছে শহুরে নেড়ি কুত্তার মতো
অশ্লীল অসভ্য নিষিদ্ধ সব বাণী।
লাল টকটকে রক্তের দাগ লেগে আছে,
দাঁতে কপোলে চুলে সারা গায়ে
ভ্যামপায়ার মতো।
কারো হাত থেকে সদ্য জবাইকৃত,
অবশিষ্ট কিছু মানুষের তাজা রক্ত
টপটপ করে ঝরছে।
কারো মুখে দেখি বিষাক্ত সাপের মতো,
লোভাতুর জিহ্বা লকলক করছে।
কেউবা নিজ নিজ সার্থে বনরুই'য়ের মতো,
উদরপূর্তি করেছে উইপোকা দিয়ে।
কতোগুলো কঙ্কাল দেখি রক্তমাংসের আবরনে,
রাষ্ট্রীয় সম্পদ ভক্ষন করছে ক্ষুধার্ত হায়েনার মতো।
কতোগুলো আবার জানোয়ারের বেশে,
এদিক ওদিক তাকিয়ে আছে শিকার ধরবে বলে।
আমি আর তাকাতে পারিনা ওদের পানে,
ভয়ে আতঙ্কে আমি দিশেহারা মূর্ছিত।
এ জনমে তবে কি, মানুষ দেখা হবে না আর!
কিছু মানুষ দেখেছি আমি,
দেখেছি ক্ষুধার্ত জীর্ণ শীর্ণ নতমুখ হয়ে,
ওদের মাঝে পথ চলছে সাবধানে আতঙ্কে।
তারা বেঁচে আছে কিছু সত্যিকার মানুষের
জন্ম দিবে বলে, বেঁচে আছে অন্তিম প্রত্যাশা নিয়ে।
মানুষ দেখবো বলে বেড়িয়েছিলাম সকালবেলা,
মানুষ তো দেখা হলো না,
পেলাম মানুষের আদলে কিছু অমানুষের দেখা।