গৃহ বন্দি তাই আমি শখের বাউল ,
নরসুন্দরের দেখা নেই তিন মাস ।
হাহুতাশ করা পরানটাও আজ ,
অবসরে বসে একাই খেলছে তাস।।

আন্তর্জাল কে অনেক ধন্যবাদ,
যার আছে তার সময় কাটে বেশ।
পাতার পরে পাতা উল্‌টিয়ে,
আমি এখন এ যুগের কলম্বাস ।।

দিনশেষে তাই রাত ও গড়িয়ে,
নাকি কখনো বিকেলটাও সকাল।
নক্ষত্ররাজীরাও দাঁড়িয়ে ,
তারা ও কি ঘুমিয়েছে আজকাল।।

কাজ নেই তাই খই ভাজি চলো বেশ,
কড়াই এখন সোশ্যাল মিডিয়া ।
গলা-গলি বন্ধ সামাজিক দূরত্বে ,
বাকি টুকু তো পুরনো অভ্যেস ।।

তাগিদের জোরে আতেও লাগলে ঘা,
হাত ধুইয়ে ই শান্ত থাকো বেশ।
নেই কোলাহল আর কোন সমাবেশ,
আমরা এখন মুখোশে সভ্যতা।।

শান্ত থাকার মুখোশ পরা,
ভদ্র থাকার ও আছে।
লক্ষ্মী মেয়ের মুখোশ পরে,
সেও ভীষণ কাজের।।

যার থাকেনা পা মাটিতে,
সেও পড়ে ঘুমায়।
দিন দুপুরে কর্ম ফেলে,
শূন্যে ঘুড়ি উড়ায়।।

জ্ঞানহীনের জ্ঞানীর মুখোশ
নিজের যেমন সাজে।
তোমরা তো ভাই কম যাও না
সমালোচনার ঝাঁঝে।।

মুখোশ পরায় ব্যস্ত সমাজ,
মুখোশ বদল দিনে।
একযোগে ভোল পাল্টে ফেলে
খোলস বেদুইনে ।।

যেমন, গিরগিটি টা রঙ বদলে
সময়েরই সাথে।
বদলে তেমনি দিন দুনিয়া
পরিস্থিতির চাপে।।

বদলে আকাশ ঋতুর বাঁকে,
বদলে জমিন তারই সাথে।
স্বভাব তবু বদলে নাকো,
খোলসে ঠিকই ঢাকা।

যতই তুমি খুঁজতে থাকো,
ঠিক আমাকে পাবে নাকো।
শান্ত-শিষ্ট ভদ্র আমি,
মুখোশ আমার আঁটা।।

যাচ্ছে যে দিন চলেই যাবে,
হাজার মুখোশ ভিড়ে।
তার ভেতরে আপনি কোথায়,
দেখো অন্তঃপুরে।।

বাঁচতে হলে মুখোশ পরো,
যাচ্ছে কি তা বাঁচা।
কীটের মত পড়ে থেকে,
জ্যান্ত সেজে থাকা।।

টিকে থাকা ও দিনে দিনে,
আপন সাথে যুদ্ধ করে।
কাটবে কি দিন এমন ভাবে,
বেঁচে থাকার মুখোশ পরে ?

তবু, ভালো থেকো রং বাহারি ,
সেধে রেখো চাঁদমারি তে।
সুসময় ফিরলে আবার,
ফিরবে আপন সত্তাটাতে।।

ভালো থেকো মুখোশ আমার,
বদলে যেও দিনের শেষে।
ভালো থেকো মুখোশ সমাজ,
দুর্দিনে তে হাত গুটিয়ে।।
          -/-
(  ২০.০৬.২০ মিরপুর ১ । )