পাওয়া না পাওয়ার মাঝে কিছুটা ফাঁক সবসময়েই থেকে যায়
চির আকাঙ্খিত অধরা থেকে যায় বহু সময়েই
আবার তেমনি কিছু অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি হঠাৎ করেই
পূর্ণতা দিয়ে যায় আমাদের
এই লক্ষ্য যোজন দূরত্বের ফাঁটলে ক্যানো জানি না,
মাঝে মাঝে নিজেকে বড্ডো একা লাগে
ঠিক যেভাবে হেমন্তের সন্ধেবেলা আকাশে রাত নামে
কিংবা সূর্য এক দিগন্ত রেখা ছেড়ে অন্যটিকে রাঙায়
আচ্ছা, গোধূলির আলোতে প্রেম বাড়ে কি?
মুহূর্তের জন্যে আবছা চোখে ধরা পরে তোমার মুখ
পরক্ষনেই আবার ধূসরে মিলিয়ে যায়
আমার জানালার কার্নিশে পড়ন্ত রোদে
তোমার গন্ধ হাতড়ে হাতড়ে মাঝে মাঝে পৌঁছে যেতাম
গড়ের মাঠে
এক আলোকবর্ষ দূরত্বে থেকেও ছুঁতে চাইতাম তোমাকে
যদিও, ফুচকার টক জলে তোমায় আমার খোঁজার অভ্যেসগুলো
ফেলে দেয়া শালপাতার সাথেই গত হয়েছে
আচ্ছা, এতটাই সোজা কি সব ভোলা?
প্রত্যেক বার-ই এক পদক্ষেপে নতুনের আসা করতে গিয়ে
দু-পা পিছিয়ে আসি
এক বুক মরুভূমিতে ঠিক কতখানি বৃষ্টি দরকার প্লাবন আনার জন্যে?
ভাবনাগুলো বড়োই বিচ্ছিন্ন
মুহূর্ত বোনার আস্বাদে আমি মশগুল ছিলাম
আর অলক্ষণেই তুমি তৈরী করে দিচ্ছিলে একের পর এক স্মৃতি
সেই বিচ্ছিন্ন টুকরো স্মৃতিগুলোর জালে আমিও সপে দিয়েছিলাম নিজেকে
তবে, নিজেকে জড়িয়ে রাখতে ভুলেছি অনেক পরিমিতি
অন্ধকার ঘরে ভালোবাসাদের জন্ম-মৃত্যু
প্রতিনিয়তই ঘটে চলে চোখের পলকে
চিতায় পুড়ে চলে ওদের লাশ রোজ, রোজ অন্তত কয়েক হাজার
সংখ্যাটা কয়েক কোটিও হতে পারে।
তার পোড়া গন্ধের সাথে পোড়া ছাই উড়ে বেড়ায় আমার শরীরে
আর আমার গলার স্বরে
তারা গুঁটি বাঁধতো আমার অভ্যন্তরে, কুরে কুরে খাওয়ার লিপ্সায়
আমার নিঃস্বাসে থমকে থাকতো অনেকটা অভিমান
হয়তো চাইলে অনেক কিছুই আটকানো যেত
হয়তো চাইলে অনেক কিছু করতেও পারতাম
কিন্তু শেষ-মেশ হয়ে উঠলো না কিছুই আর
নিজের অন্ধকারগুলো কখন যে নিজের অজান্তেই
আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করলো
তার প্রমান পেলাম আমার চোখের নিচের গভীর কালোতে
এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো সময়।
হারিয়ে যেতে যেতে একসময় কারণগুলোর ক্লান্তি আসে
sleeping-pills গুলো পরে থাকে আমার মাথার পাশে
সেগুলোও আর আবেশ আনতে পারে না স্নায়ু-তন্ত্রীগুলোতে
আমি ঘেটে দেখেছি তার পরেও বিভিন্ন নারী শরীর
শুধু উত্তর পাওয়ার আশায়
তোমাকে খুঁড়ে আনার ছুতোয়
কিন্তু বারবার খালি তলিয়েই গিয়েছি গাঢ়তর তমসায়
নিজেকে শেষ করে ফেলার সিদ্ধান্তে বদ্ধপরিকর যখন
ঠিক সেই মুহূর্তেই আরো একটা উত্তর এর খোঁজে তোলপাড়
হলো আমার সত্তার ধ্বংসাবশেষ
কি লাভ, শেষ হয়ে গিয়ে এই ভাবে?
অপুষ্ট মা যখন তার শরীর নিংড়ে সমস্ত রস তার কোলের বাচ্চাকে
পান করায় তাকে বাঁচিয়ে রাখতে
কিংবা রানাঘাট স্টেশনের সেই বুড়ো লজেন্সওয়ালাটা,
যে কিনা সন্ধের পরে চায়ের দোকানে শুকনো মুড়ি
ভাঙা চোয়ালে চিবোতে থাকে।
আমার কষ্ট কি তাদের থেকেও বেশি?
আমি বেঁচে থাকতে চাই তাদের হাসিতে
খুঁজে নিতে চাই পরিতৃপ্তির রসদ তাদের সুখ সেঁচে
ভালোবাসার আগুনে গলিয়ে দিই মনের কোনায় জমা সহস্র হিমবাহ
আবার দুকূল ছাপিয়ে বন্যা আনুক প্রেম
উজাড় করে দিলাম আবার নিজেকে ভোরের কুয়াশার মাঝে
খুঁজে নিতে পারবে কি তুমি আজ আমার আমাকে?
নাকি dustbin-এ পরে থাকবে কতগুলো ভাঙা frame-এর ভিড়ে?