নাবালিকা,
যাবার বেলায় তোমার অস্ফুট কান্না
আমায় বারবার দুর্বল করে দিচ্ছিল,
ধূধূ এক ব্যথা জমেছিল তোমার কণ্ঠে
সেই নিঃশব্দ চিৎকার হৃদয়ে তুলেছিল উত্তাল ঝড় ।
তুমি বলেছিলে, "আমায় ছাড়া তুমি ঘুমবে কিভাবে ?"
বিশ্বাস করো, ঘুমতে পারিনি আমি;
সারাটা রাত ঘড়ি ধরে কেটে গেছে তাড়াহুড়োয়
তবু আমার চোখে ঘুম ছিল না এক বিন্দু,
তোমার কণ্ঠ না শুনে ঘুমতে পারিনি-
এই বৃষ্টির রজনীর জমকালো রাতগুলো
আমায় শুধু দিয়ে গেছে মখমলের বেদনা-
নিদ্রাতুর আকাশের দিকে তাকিয়ে খুঁজেছি তোমাকে
একই আকাশের নিচে থেকেও
দেখা মেলেনি তোমার ঘরের দরজা ।
ঘন আঁধারে ডুকরে কাঁদতে চেয়েও কাঁদতে পারিনি
তিলে তিলে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে হৃদয়,
মোহরের দেশে সবাইকে বেমানান মনে হয়েছে
বুকের ভেতরটায় মাটি চাপা পড়েছে আকাশ সমান শূন্যতা;
নাবালিকা, আমি ঘুমতে পারিনি-
আমার জন্য তুমি ভোর নিয়ে আসোনি বলে
বৃষ্টির রজনীর আকাশও এনে দিতে পারেনি এক মুঠো ঘুম ।
নিশাচর হয়ে ঘুরেছি পুরোটা শহর
কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো জলধারার উপর-
তবু বিশ্বাস করো নাবালিকা,
খুঁজে পাইনি তোমায়,
শূন্যতা কতটা ভয়াবহ হতে পারে বুঝে গেছি আমি ।
পুরোটা রাত যখন একদম ঘুমে
তখন বারবার মনে হয়েছে তুমি কাঁদছ;
সেই কান্নার শব্দ কানে পৌঁছেনি
তবু হৃদয় চুরমার করে দিয়েছে আমার;
কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়ে নিয়েছে এক একটি রাত
দিনের আলো আসেনি আমার ঘরে-
স্তব্ধতায় কেটেছে সমগ্র কাদামাখা পথ,
ও পথে তোমার দেখা মেলেনি, মিলেছে অনুপস্থিতি ।
নাবালিকা, বেদনা তাড়িয়েছে আমাকে
বৃষ্টির রজনীর জমজমাট বিজলীবাতির ভিড়ে
একাকীত্বের আঁধার ডুবিয়ে মেরেছে আমায়;
তবু বিশ্বাস করো, বিকট ঝালরের শহরে-
আলোর মাঝে চাপা পড়েছি, ঘুমতে পারিনি তোমাকে ছাড়া ।
- জিহান আল হামাদী
২৯এ জুন'২০১৩