আমি কোনো দিনও ভাবিনি যে সাহিত্য জগতে আসতে পারব। ছোট থেকেই কবিতা, ছড়া পড়তে ভালোলাগে। বহুবার কবিতা লেখার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু পারিনি। সালটা ২০২২, তখন আমি দশম শ্রেণীর ছাত্র। মে মাস চলছিল, গরমের জন্য নিয়ম করে গ্রীষ্মকালীন ছুটি পড়েছিল স্কুলে। বাড়িতে ছিলাম, কখনো ঘুরছি, কখনো খেলছি বেশ আনন্দে দিন চলে যাচ্ছিল।
একদিন বন্ধুদের সাথে খেলছি, খুব গরম পড়েছে। বেঁচে থাকা দায়। হঠাৎ মাথায় এলো দুটো লাইন,'সৌর তাপে জল শুকেছে,/ঝলসে গেছে ঘাস,'। বন্ধুদের বলার পর বন্ধুরা পরের লাইন শোনার ইচ্ছা প্রকাশ করলো। তখন আমি কবিতার মাথা মুন্ডু জানি না। ছন্দ সম্পর্কে কোনো ধারনাই নেই আমার। কোনো রকম অন্তমিল করে বললাম,'বর্তমানের তাপমাত্রা/ বিয়াল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস।' তৈরি করতে পেরে খুব আনন্দিত হলাম। এভাবে একে একে লিখে ফেললাম ১৬ লাইন। নামকরণ করলাম-'গ্রীষ্মের দাবদাহ'।
পরের দিন সকালে কোচিং এ গিয়ে সকল বন্ধু-বান্ধবীদের লেখাটা দেখালাম; সবাই বললো বেশ ভালো। ইংরেজি বিষয়ের স্যার কোচিং এ এলেন, এবং একটি ইংরেজি কবিতা পড়ালেন। বন্ধুরা স্যার কে জানিয়ে দিলো আমি কবিতা লিখেছি। স্যার বললেন, 'কি অং বং চং লিখেছে দেখি'। বন্ধুরা আমার লেখাটা স্যার কে দিলো, স্যার জোরে জোরে পড়ে কোচিং এর সবাইকে শোনালেন। তার আমাকে বললেন বেশ ভালো। জিৎ এর জন্য হাততালি; সবাই হাততালি দিলো। খুব উৎসাহিত হলাম। সেদিন থেকে লিখতে শুরু করলাম।
সাত-আটটা মতো কবিতা লিখে ফেলেছি, একদিন সন্ধ্যায় বাংলা বিষয়ের স্যারের ক্লাস চলছে এমন সময় হঠাৎ বন্ধু সৌভিক আমার কবিতার ডায়েরিটা স্যারের হাত দিলো। স্যার যে একজন কবি-সাহিত্যিক আমার জানা ছিলোনা। স্যারের নাম স্বাধীন কুমার আচার্য্য। স্যার দুটো কবিতা পড়ে বললেন ছন্দ পতন হয়েছে। তারপর ঠিক করে দিলেন, বললেন লেখা থামাতে না, এবং লিখে দেখাতে। তিনি ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেবেন। এভাবে প্রায় এক বছর স্যারের কাছে কবিতা লেখার প্রশিক্ষণ নিলাম। শুরু হলো নিরলস সাহিত্য সাধনা। অনেক কবিতা লিখে ফেললাম। বহু কবি-সাহিত্যিকের সাথে পরিচিত হলাম। বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় আমার কবিতা প্রকাশিত হলো। এভাবেই চলেছে আমার সাহিত্য সাধনা।
(আলোচনার তারিখ: ২৭/০১/২০২৫)