মনের আঙিনা জুড়ে বেদনার ছাপ,
কবেকার স্মৃতি এসে দেখাচ্ছে প্রতাপ।
সেই কবে গ্রাম্য মেয়ে হেসেছিল চেয়ে,
কোকিল মধুর স্বরে উঠেছিল গেয়ে।
আবাধ্য চুলের রাশি বিনুনিতে বাঁধা,
মা-বাবার আদরের সুহাসিনী রাধা।
হাসনু হেনার শাখে রাখা তার হাত,
অধরে মৃদু হাসির উড়ন্ত প্রপাত।
প্রজাপতি ডানা মেলা কিশোর সকাল,
শুভ্র শাড়ির আঁচল যেন রাঙা পাল।
অনিমেষ আঁখি জুড়ে কথার জোয়ার,
কানে পরা ফুল দুটি নড়ে বারবার।
চেয়ে চেয়ে দেখেছিলে বোঝনি তো ভাষা,
সেই থেকে রাধিকার বন্ধ হলো হাসা।
তারপর---
তারপর কেটে গেছে পনের বছর,
রূপসী কামিনী নিয়ে বাঁধিয়াছ ঘর।
হঠাৎ পথের বাঁকে গোধূলি বেলায়,
দেখা পেলে সেই মুখ- শিশুর খেলায়
বাধা দিয়ে রুষ্ট মুখে চলেছে সে ঘোরে,
আপন শিশুর হাত রেখেছিল ধ'রে।
সেই সে অবাধ্য চুল ললাটের পর,
নয়ন যুগলে যেন অগ্নিবৃষ্টি, ঝড়।
সুমুখে তোমায় দেখে থেমে গেল চলা,
ক্রোধান্বিত চোখে ভাষা- হয়নি যা বলা।
ক্ষণিক বিব্রত থেকে চিনে সে তোমায়,
কটাক্ষে বিদ্রুপ হাসি হেসে চলে যায়।
দিবাকর ঢেকে রাখা মেঘ সরে গেলে,
যেভাবে ধারায় আলো যায় হেসে খেলে।
সেভাবে তোমার মনে উদিল সে মুখ,
উঁকি দিল সেদিনের ভালো লাগা সুখ।
কৈশোরের সেই স্মৃতি ধরা দিল মনে,
দাঁড়ালে ক্ষণিক চুপে পথে নিরজনে।
অপসৃয়মান রাধা তাকালো না ফিরে,
বিষণ্ণ বদনে থির তুমি ধীরে ধীরে,
তাকালে গমন পথে বিস্ময় অপার
মনে আশা রাধা যেন চায় পুনঃবার।
পুরিল না মনোরথ- ঘিরিলো আঁধার,
চলিলে গন্তব্যে তুমি বয়ে দুঃখ ভার।
১৫/০৩/২০২৫ ইং