একজন কবি বা লেখক লেখেন l সেই লেখা পাঠক পড়েন l পাঠকদের নানারকমের প্রতিক্রিয়া হয় l সেই প্রতিক্রিয়া কেউ প্রকাশ করেন, কেউ করেন না l পাঠকের মধ্যে লেখক সমালোচকও থাকেন l তাঁদের কেউ কেউ পঠিত লেখার ওপর আলোচনা করতে পারেন l এই আলোচনা তিন রকম হতে পারে - প্রশংসা, নিন্দা, গঠনমূলক অর্থাৎ বস্তুনিষ্ঠ মানে ভালো অংশের প্রশংসা, মন্দ অংশের নিন্দা আবার কিছু প্রস্তাব, সব মিলিয়ে l এর সঙ্গে যোগ হয় যিনি আলোচনা করছেন তাঁর মুন্সিয়ানা, অর্থাৎ আলোচকের লেখার গুণে সেই আলোচনাও সৃজনশীল সাহিত্য হয়ে যেতে পারে, যেমন রবীন্দ্রনাথ বলেন "আলোচনা হলো একটি ফুলের পাশে আর একটি ফুল ফোটানো l" অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ মূল লেখা এবং তার আলোচনা উভয়কেই 'ফুল' বলছেন l
যিনি সমালোচনা করবেন তাঁর লেখাটির প্রতি দরদ থাকতে হবে, সহানুভূতি থাকতে হবে l জনৈক লেখক বলছেন, "লেখক যদি লেখার মধ্যে বিশেষ কোনো অন্যায় করে বসেন, তাঁকে সত্য কথা বলে সমালোচনা করা অন্যায় নয় l কিন্তু তার মধ্যেও সৌন্দর্য্যবোধ ও সহানুভূতি থাকা বাঞ্ছণীয় l লেখককে শুধু কষাঘাত না করে, রসাঘাত করলে, লেখক তবু নিজের দিকে ফিরে চাইবার সুযোগ পান l" (কল্লোল প্রবন্ধ সংগ্রহ, সম্পাদনা বারিদবরণ ঘোষ, পৃষ্ঠা - ২০)
অর্থাৎ সৌন্দর্যবোধ ও সহানুভূতিযুক্ত আলোচনা লেখককে সমৃদ্ধ করে কারণ, তিনি তা সিরিয়াসলি গ্রহণ করেন এবং তার থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধতর করার প্রয়াস করেন l অপরপক্ষে যে আলোচনা শুধুই কষাঘাত, নিন্দা, সহানুভূতিবর্জিত, যার মধ্যে সৌন্দর্যবোধ নেই, সেই আলোচনাকে লেখক এড়িয়ে চলেন l ফলে এই শ্রেণীর আলোচনা লেখককে বা তাঁর লেখাকে কোনোভাবেই উপকৃত করে না l

পাঠক বা আলোচক যেমন একটি লেখা সম্বন্ধে মতামত পোষণ করেন, একজন সচেতন লেখকও তেমন তাঁর নিজের লেখা নিয়ে ভাবেন l তিনি নিজেও তাঁর লেখার বিশ্লেষক l তিনি বুঝতে পারেন তাঁর শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাটি l এই বোঝার জায়গা থেকে নিজেকে তিনি উত্তরোত্তর পরিবর্তিত করে চলেন l যে জায়গাগুলিতে তিনি নিজেকে শক্তিশালী বলে মনে করেন সেই জায়গাগুলি ধরে থাকেন, আরো উন্নত হবার প্রয়াস করেন এবং যে জায়গাগুলিতে তিনি নিজেকে দুর্বল পান, সেই চৰ্চাগুলি ধীরে ধীরে কমে আসে l এই কারণেই দেখা যায় লেখালেখির প্রথম পর্যায়ে কেউ হয়তো গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ বা আরো কিছু চৰ্চা দিয়ে শুরু করলেন, কিছুদিন পর থেকে দেখা গেলো কেউ হয়তো পুরোপুরি কবিতার দিকে, কেউ ছড়ার দিকে, কেউ গল্পের দিকে, কেউ বা একাধিক দিকে ঝুঁকে গেলেন l যে ধরণের লেখায় একজন লেখক স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, মূলত সেই ধরণটিকেই তিনি আঁকড়ে ধরেন l নানা কারণে অন্য ধরণের লেখা কিছুক্ষেত্রে হয়তো তাঁকে লিখতে হয়, কিন্তু হৃদয়ের একটা টান থাকে l সেই টান থেকে যে লেখা বেরোয় তার মান উন্নত হতে বাধ্য l

যাঁরা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, তাঁরা দক্ষতার সঙ্গে একাধিক ক্ষেত্রে প্রতিভার পরিচয় রাখেন এটিও সত্য l অনেক লেখক আছেন যাঁরা গল্প, কবিতা, উপন্যাস বা আরও কোনো ক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে লেখেন l সুনাম পেয়েছেন l কিন্তু তবু বলা যায় তাঁদের এই বহুমুখী ধারার মধ্যেও দক্ষতার কমবেশি থেকে যেতে পারে l কোনো একটি বা একাধিক ক্ষেত্রে তাঁর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বেশি থাকতে পারে অন্য কোনো ক্ষেত্রের তুলনায় l
বহুমুখী প্রতিভার উদাহরণ হিসাবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বাইরে কাউকে ভাবতে পারি না l বাংলাভাষায় আলোচনা সাহিত্যের যিনি পথিকৃৎ সেই শশাঙ্কমোহন সেন রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে বলছেন,
"তাঁহার প্রতিভা নিত্য নব নব পথে খেলিতেছে। তিনি বঙ্গসাহিত্যকে এমন শব্দ-সম্পদ, ভাবের উপাদান, রচনার কারুকার্য, চরণের গাম্ভীর্য, অলংকারের পারিপাট্য ও ছন্দের শত সহস্র প্রকার বৈচিত্র্যে ভূষিত করিয়া যাইতেছেন যে, বঙ্গভাষা স্পর্ধা করিয়া পৃথিবীর অন্য সাহিত্যকে আপন কুটিরে নিমন্ত্রণ করিতে পারে।"
(রবীন্দ্রসাহিত্যে সমালোচনার ধারা, পৃ. ৬৪)।

বস্তুত ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে বাংলায় যে নবজাগরণ এসেছিলো তার কান্ডারী ছিলেন অনেকেই - মধুসূদন, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র আরও অনেকে কিন্তু বাঙালির রেনেসাঁসের মহত্তম প্রকাশ অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ। তিনি উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দুই দশক এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম দু’দশকের মধ্যে বাংলা সাহিত্যকে এমনভাবে সমৃদ্ধ করেছিলেন যে, বাঙলা সাহিত্য আজ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে একাসনে বসতে পারে । কাব্য-কবিতা, গীতিকবিতা, শিশুসাহিত্য, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, সঙ্গীত, নৃত্যনাট্য, কাব্যনাট্য, মননশীল এবং আত্মগত প্রবন্ধ, পত্রসাহিত্য, আলোচনা, সমালোচনা - সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যা রবীন্দ্রনাথের জাদুকরী প্রতিভায় দীপ্ত হয়নি।

কিন্তু তবু বলা যায় সকল ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ সমান স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন নি বা সমান সফলতা পান নি l এ বিষয়ে অন্য আলোচক সমালোচকদের যেমন বক্তব্য আছে তেমন রবীন্দ্রনাথের নিজের উপলব্ধির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ এবং এই উপলব্ধির জায়গা থেকে পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন l

কোন ক্ষেত্রগুলিতে রবীন্দ্রনাথ অপেক্ষাকৃত অস্বচ্ছন্দ  ছিলেন ?  দুটি বিষয়ের উল্লেখ করা যেতে পারে l সমালোচনার ক্ষেত্রে এবং নাটক রচনায় l

বিশিষ্ট আলোচক ও প্রাবন্ধিক ড. অনুপম সেন বলেছেন, "রবীন্দ্রনাথ সমালোচনার ক্ষেত্রে অসাধারণ কিন্তু তাঁকে সমালোচক বলাটা হয়ত যথার্থ হবে না। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়- “সমালোচনা হচ্ছে একটি ফুলের পাশে আরেকটি ফুল ফোটানো।” তাঁর সমালোচনা আসলে ফুলের মতো। তার সৌরভ আমাদের আমোদিত করে। তার সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করে। কিন্তু সমালোচনা বলতে যা বোঝায় প্রকৃত অর্থে রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা তা নয়। তাঁর সমালোচনাকে আমরা আত্মগত সমালোচনা বলতে পারি, যথার্থ বিষয়ভিত্তিক সমালোচনা নয়।" (শশাঙ্কমোহন সেন - বাংলা সাহিত্যের পথিকৃৎ : ড. অ নু প ম সে ন)

নাটক রচনার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ (১৮৬১-১৯৪১) ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ (১৮৬৩-১৯২৭) এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩-১৯১৩) এর সমসাময়িক l ক্ষীরোদপ্রসাদ ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক উভয় ধরণের নাটক রচনা করেন l এছাড়াও আরব্য ও পারস্য উপন্যাস অবলম্বনে তিনি রচনা করেন 'আলিবাবা' নাটক l দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ও ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক নাটক লিখে খ্যাতি অর্জন করেন l জীবনবোধ ও মানবিক আদর্শকে নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি l বলা হয় রবীন্দ্রনাথ নাটক নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করেন এবং বাংলা নাটকে নতুন মাত্রা যোগ করেন l এক নতুন ধারার সূচনা হয় বাংলা নাটকে - কাব্যনাট্য, নৃত্যনাট্য, গীতিনাট্য, রূপক বা সাঙ্কেতিক নাটক l যদিও নাটক হিসাবে এই প্রয়োগগুলি কতোটা সার্থক তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেছে l

নাটক রচনা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সীমাবদ্ধতা প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব বসুর এই কথাটি প্রণিধানযোগ্য, "
“রবীন্দ্রনাথে কী নেই, কোন প্রত্যাশা তাঁর পক্ষে অবান্তর, সেইটেই প্রথমে বুঝে না নিলে আমরা তাঁর প্রতি সুবিচার করতে পারবো না। তাঁর কবিতায় তীক্ষ্ণতা নেই, নেই কোনো বিসংবাদী সুর, তাঁর কোনো পঙ্ক্তি হাতুড়ির মতো আঘাত করে না, যখন তিনি সবচেয়ে মর্মস্পর্শী তখনও তিনি উপরিস্তরে মধুর।” (শশাঙ্কমোহন সেন - বাংলা সাহিত্যের পথিকৃৎ : ড. অ নু প ম সে ন)

শশাঙ্কমোহন সেন বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ নিজের সবিশেষ কবিধর্মে, সাহিত্যক্ষেত্রে কোনো প্রকার তীব্রতা, তীক্ষ্ণতা, পুরুষাচার কিংবা বাস্তবতন্ত্রী রুক্ষতা ভালবাসেন না।” (বাণীমন্দির : পৃ. ১০৬)।

নাটক রচনার ক্ষেত্রে তীক্ষ্ণতা, তীব্রতা, রুক্ষতা অন্যতম উপাদান l দ্বন্দ্ব সংঘাত, জীবনের রূঢ় বাস্তবের মোকাবিলা নাটকের অন্যতম উপজীব্য l কিন্তু এই বিষয়গুলি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের অনীহা ছিলো l এগুলিকে সরাসরি দেখাতে পারেন নি বলে তিনি রূপক নাটক রচনার দিকে ঝুঁকেছিলেন l বুদ্ধদেব বসু লিখেছেন, “(রবীন্দ্রনাথকে) লিখতে হয়েছিল রূপক নাটক, যাতে চরিত্রচিত্রণের দায়িত্ব নেই, আর উত্তরজীবনে এমনসব উপন্যাস যাতে পাত্রপাত্রীরা অবস্থানির্বিশেষে রবীন্দ্রনাথের মতই সাহিত্যিক ভাষায় কথা বলে।” (কবি রবীন্দ্রনাথ : পৃ. ১০)।

শশাঙ্কমোহন সেন বলছেন, রবীন্দ্রনাথের নাটকে সব আছে, “নাই কেবল প্রাণ। এত বর্ণনার পারিপাট্য সাহিত্যে অল্প নাটকেই আছে। কিন্তু, সেই সর্বাপেক্ষা অপরিহার্য এবং অন্তরতম পদার্থটির অভাবে যেন সমস্ত বিফল হইয়া গিয়াছে। এই কারণে তাঁহার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রকৃত সহানুভূতি হয় না; সকলেই অভিনয়ের জন্য ব্যস্ত এবং সঙ্গীতভারাক্রান্ত বাক্য বিন্যাসের জন্য একান্ত ব্যাকুল!" (বঙ্গসাহিত্যের বিকাশ, বঙ্গবাণী : পৃ. ১৫১)।

এ প্রসঙ্গে প্রায় একই অভিমত পোষণ করেছেন কবি সমালোচক সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, “রবীন্দ্রনাথের নাটকের চরিত্রাবলী চমকপ্রদ বাকচাতুর্যে আমাদের তাক লাগায় বটে, কিন্তু সংক্রামক আবহের সমর্থন পেয়েও তারা শেষ পর্যন্ত কলের পুতুলের মতো নিষ্ক্রিয় থেকে যায়।” (সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধ সংগ্রহ : পৃ. ২১৫)। তিনি আরও বলেছেন, "গীতিকবিতার ক্ষেত্রে তিনি (রবীন্দ্রনাথ) যে উৎকর্ষে পৌঁছেছেন, নাটক রচনার বেলা সেই পরাকাষ্ঠা তার নাগালে আসেনি কেন?" এর কারণসন্ধান করেছেন সুধীন্দ্রনাথ, "যদিও (রবীন্দ্রনাথ) সংস্কৃত কবিদের আবশ্যিক শুভবাদ কাটিয়ে একাধিক বিয়োগান্তুক নাটক লিখেছেন, তবু মহাপুরুষেরা শুদ্ধ যে অন্ধ নিয়তির পদানত"এ কথা তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না l
অর্থাৎ সফোক্লিস বা শেক্সপীরীয় নাটকে যা পাই, নিয়তির পীড়নে মানুষের দ্বন্দ্ব-সংক্ষুব্ধ জীবন ও শুভাশুভের সংঘাত, নির্মমতা, কাঠিন্য, বাস্তবতা, যে কারণে নাটক হিসাবে এই রচনাগুলি যুগ যুগ ধরে জনপ্রিয় ও সফল, তা রবীন্দ্রনাথের নাটকে অনুপস্থিত যেহেতু তা রবীন্দ্রনাথের গীতিময় কবিসত্তার অনুকূল ছিল না। ট্রাজিক ত্রুটি যা বিয়োগান্তক নাটকের মুখ্য চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, নিজে ভালো হয়েও নিজেরই চরিত্রের বা ব্যক্তিত্বের কোনো দুর্বলতার জন্য গ্রীক নাটকের চরিত্রগুলি যেভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তা রবীন্দ্রনাথ অনুসরণ করেন নি l শেক্সপিয়ার এর নাটকে আমরা এর প্রয়োগ দেখতে পাই l যে কারণে হ্যামলেট, ওথেলো, কিং লিয়ার, ম্যাকব্যথ এর পতন দর্শকের সহানুভূতি পেয়ে যায় এবং নাটকগুলি অসাধারণ জনপ্রিয় হয়ে আছে যুগ যুগ ধরে l পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের নাটকের বৈশিষ্ট্য চরিত্রসৃষ্টি নয়, ভাবসংবেগের প্রাবল্য। সমালোচকদের মতে ‘রাজা ও রাণী’ ও ‘বিসর্জনের’ বাগবাহুল্য নাটক দুটিকে সার্থক নাটকে পরিণত করেনি l এই উপলব্ধি রবীন্দ্রনাথেরও হয়েছিল l এই কারণে নাটকগুলিকে আধুনিককালের উপযোগী করে তোলার জন্য রবীন্দ্রনাথ নাটক দুটির নামটুকু ছাড়া আর সবই বদলে দিয়েছেন l এই পরিবর্তনের ফলে তা আলোচকদের প্রশংসা পায় ও সাধারণ দর্শকদের মাতিয়ে তেলে। ‘অচলায়তন’, ‘রাজা’, ‘রক্তকরবী’ প্রভৃতি নাটকে রবীন্দ্রনাথ যেন নীতিকারের ভূমিকা নিয়েছেন l

শশাঙ্কমোহন সেন লিখছেন, "শেক্সপীয়রীয় পদ্ধতির জীবনচিত্র রচনা রবীন্দ্রনাথের নহে। সৌভাগ্যক্রমে ‘বিসর্জন’ এবং ‘রাজা ও রাণী’র পর রবীন্দ্রনাথ আত্মশক্তির রহস্য বুঝিয়াছিলেন। জীবনার্থের দার্শনিকা-প্রকাশরীতি, গীতিকা ও রূপকরীতিই তাহার পক্ষে স্বাভাবিক।" (বাণীমন্দির, পৃ. ১০৯-১১০)।

প্রকৃত লেখকমাত্র আত্মসমালোচক, নিজের প্রকৃতি বুঝতে পারেন এবং সেই অনুসারে নিজেকে গড়ে তোলেন l

** সেতু ১৬ বর্ষ, ৪১ সংখ্যা অক্টোবর ২০২২ এ প্রকাশিত