বিরহ বেদনা তখনই আসে যখন প্রেমের একটা অধ্যায় পূর্ণ করার পর যে কোনো কারণেই হোক সেই প্রেমের সম্পর্কে ছেদ পড়ে l অর্থাৎ বিরহ যন্ত্রণা উপলব্ধি করার আগে প্রেমের মধুর সুখ আনন্দ উপলব্ধির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় l এই আনন্দসুখ ও বিরহবেদনা নানারূপে একেকজনের কাছে ধরা দেয় l 'ভীতু' কবিতায় কবি অমিতাভ শূর এরকম এক প্রেমিকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন l এখানে প্রেমিক বলছে সে তার প্রেমিকার মধ্যে হারিয়ে গিয়ে যেন মুক্তির আনন্দ লাভ করে l অর্থাৎ প্রেমিকাই তার জীবনের ধ্যানজ্ঞান l তার জন্যই বেঁচে থাকা l এবং তার জন্য মরে যেতেও তার কোনো আপত্তি নেই l এই মৃত্যু তার জন্য যতো যন্ত্রণাদায়কই হোক না কেন, তার মধ্যেও সে এক সুখ খুঁজে পায় l
প্রেমিকার প্রতি তার ভালোবাসা এতটাই নিবেদিত ছিল যে তার রাগ, বকুনি, অভিমান সবই সে হাসিমুখে মেনে নেয় l তার যে কোনো কথাই তার কাছে সুরের ঝঙ্কার বলে মনে হয় এবং এর মধ্যে সে এক অনিন্দ্যসুখ অনুভব করে l
দিনে, রাতে রোদে অন্ধকারে, রাজপথে গলির বাঁকে কিংবা নীরব নদীর তীরে যখন সে প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটাতো, তখন সে সময়গুলি ছিল আনন্দময় l
দুর্ভাগ্যক্রমে সেই প্রেমিকা এখন সঙ্গে নেই l প্রেমিকার সাথে সাথে যেন প্রেমিকের সব আনন্দ, উত্সাহ, সাহসও চলে গেছে l এখন আর সে যখন তখন মরার কথা ভাবতে পারে না l কষ্ট যন্ত্রণা সহ্য করার শক্তিও অনেক কমে গেছে l নিজেকে এগুলির থেকে দূরে রাখার চেষ্টা থাকে l প্রেমিকার অভাবে সাহস চলে গিয়ে এখন ভীতু হয়ে পড়েছে সে l প্রেমিকা ছিল তার মস্ত সহায় l তার কাছে হেরে গিয়ে, হারিয়ে গিয়েও নিজেকে খুঁজে পেত সে l এখন নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো কোনো নিশ্চিন্ত আশ্রয় নেই তার l চারিদিকটা যেন ঊষর মরুভূমির তপ্ত বালির মতো হয়ে গেছে l সেই তাপে সারাক্ষণ পুড়ে চলেছে সে l কোনো নিরাময় নেই l
প্রিয়ার সঙ্গ এবং প্রিয়ার বিচ্ছেদ একজন প্রেমিকের জীবনবোধ কিভাবে পাল্টে দিতে পারে তারই অনুসন্ধান করেছেন কবি l
কবিকে জানাই শুভকামনা !!