প্রেম এক আশ্চর্য অনুভব l এক অমোঘ আকর্ষণ বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে কাছে আনে l পুরুষ এবং নারী বিভিন্ন কারণে পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয় l নারীর দেহসৌন্দর্য যেমন পুরুষকে তাত্ক্ষণিকভাবে তার প্রতি আকর্ষিত করে তেমনই নারীও পুরুষের মধ্যে এমন কিছু খুঁজে নেয় যা একজন পুরুষও ঠিক ভেবে উঠতে পারে না l পুরুষ নিজেও জানে না তার মূল্য যতটা একজন নারী তার সহজাত ক্ষমতাবলে একজন পুরুষের মধ্যে সহজেই খুঁজে নেয় l কবি শব্দ মাধুকরী "ভালোবাসার রূপালি চুম্বন!" শীর্ষক কবিতায় এমনই এক প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠার প্রসঙ্গ এনেছেন l
পুরুষেরা এমনি যখন তখন সুন্দরী নারীর প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়ে l সর্বদা সেই আকর্ষণের মধ্যে তেমন গভীরতা থাকে না l শুধু তাত্ক্ষণিক ভালো লাগাটাই থাকে l কদাচিত কখনো এমন ভালো লাগা ভালোবাসায় পরিণত হতে পারে l যেমনটি এই কবিতায় হয়েছে l নেহাত কৌতুহলবশতই একদিন হঠাৎ বিবসনা এক নারীর প্রতি চোখ চলে যায় কবিতায় উল্লিখিত পুরুষ চরিত্রটির l বিষয়টি ইচ্ছাকৃত হতে পারে, আচমকা ঘটে যেতে পারে l কিন্তু এই দর্শন সেই পুরুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে l নিছক শরীরী আকর্ষণের বেড়া অতিক্রম করে সেই বিশেষ নারীটির প্রতি সে দুর্বল হতে শুরু করে l তার প্রতি প্রেমভাব জাগতে শুরু করে l বুকের ভেতর আধখানা চাঁদ যেন তাকে আহ্বান করতে থাকে l মন খুশিতে ডগমগ করতে থাকে l কিন্তু পরমুহূর্তেই সে সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে l নিজের অসৎ উদ্যেশ্যের ভাবনা তাকে কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে l নিজের প্রতি আস্থাহীনতা তাকে এটা বোঝায় যে সে কোনোভাবেই ঐ মহিলার উপযুক্ত নয় l
কিন্তু মহিলার চোখে সেই যুবক গ্রহণীয় হয়ে ধরা পড়ে l সে সেই পুরুষের মধ্যে নির্ভরতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভালোবাসার উপাদন খুঁজে পায় l ভালোবাসার প্রশ্নে, অপরের ওপর নির্ভর করার প্রশ্নে মেয়েদের বিবেচনাশক্তি পুরুষদের তুলনায় অনেক দৃঢ় l ব্যগ্র হরিণীর মতো জ্যোত্স্নালোকিত আকাশতলে, বনের মধ্যে সে তার পুরুষসঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে l তার ওপর নির্ভর করতে চায় l
পুরুষ মানুষটি তার জীবনের যে এত মূল্য আছে তা বুঝতে পারে না l নিজেকে সে অপরাধীর মতো ভাবে l তার ওপর নির্ভর করে মেয়েটি যে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকে না তাঁর l মুখে তার অন্ধকারের দাগ l বুকে সর্বনাশের চিহ্ন l অথচ মেয়েটি কি না তাকেই ভালোবেসে ফেলল l তাকে দিল রূপালি চুম্বন l এই ভালোবাসা দিয়েই নারীজাতি কতো বিপথগামী পুরুষকে পথে এনেছে l
কবিকে জানাই শুভকামনা !!