শুভ জন্মদিন কবি !
মনের বিভিন্ন তাপ উত্তাপে, ভাবনার বিকিরণে কবিতার জন্ম l যেভাবে ভোরের লীনতাপে শিশিরের জন্ম হয় l ভাবের জন্মলগ্ন থেকে কবিতা আকার পেতে শুরু করে l বিচিত্র আকার l শুরুতে যেন শুঁয়োপোকা l কদাকার l দৃষ্টিকটু l তারপর গঠিত হতে হতে কবিতা যখন পূর্ণতায়, রূপ রস বর্ণময় হয়ে কবিতা চিত্তাকর্ষক হয়ে ওঠে, যেন বর্ণময় প্রজাপতি l বোধগম্যতার বিষয়ে যদিও কিছুটা আড়ষ্টতা থাকে l কবিতার গঠন, তার বহিরঙ্গ, তার অর্থ প্রভৃতি বিষয়ে কবির নিজস্ব ভাবনা কাজ করে যায় l অনেকক্ষেত্রেই সদুত্তর পান না তিনি l ফলে কবির মধ্যে এক হতাশাবোধ কাজ করে l কিন্তু এই হতাশার মধ্যেও তিনি নিষ্ক্রিয় থাকেন না l সচেতনভাবেই নিজেকে কবিতা রচনার কাজে নিয়োজিত রাখেন l "সচেতন হতাশা" কবিতায় কবি সৌম্যকান্তি চক্রবর্তী কবিতার জন্মমুহূর্ত, তার বিকাশ, তার গঠনশৈলী এবং সামগ্রিকভাবে সেই রচনাকে নিয়ে কবির নিজস্ব সন্তুষ্টির জায়গাটি ধরতে চেয়েছেন l কবিতা যখন রচিত হয়, একটির পর একটি বাক্য পঙ্ক্তির আকারে সেই কবিতার গায়ে সেঁটে যায়, যেন এক পিরামিড নির্মিত হচ্ছে l কবিতায় ব্যবহৃত প্রতিটি বাক্যের নিজস্ব অনুসঙ্গ থাকে, বিশেষ দ্যোতনা থাকে l একটি অনুসঙ্গের সঙ্গে অপরটির সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি খুব সরল থাকে না l ফলে আসে জটিলতা l আসে কবিতার অর্থকে ঘিরে দুর্বোধ্যতার অভিযোগ l কবিতার মধ্যে কিছু ভাবনা থাকে l কবিতার সামগ্রিক বিষয়ের নিরিখে সেই ভাবনাগুলির কিছু অকাজের অর্থাৎ অপ্রাসঙ্গিক থাকতে পারে l কিন্তু এমনই কিছু ভাবনাকে ঘিরে কবিতার মধ্যে আসে অপরূপ কিছু চিত্রকল্প l সেই চিত্রকল্পগুলি নিজেরাই যেন কথায় ছবিতে কবিতার স্রোত বইয়ে দেয় l মনের তাপ-উত্তাপে ভাবের ঘোরে কবি মূল কবিতা, তার বিভিন্ন অনুসঙ্গ, নানা চিত্রকল্প রচনা করে যান l শুঁয়োপোকা থেকে প্রজাপতির আকার নেয় কবিতা l তারপর কবিতা রচনা শেষ হয়, কবি ভাবালুতা থেকে বেরিয়ে আসেন, যেন নিদ্রাভঙ্গ হয় l মনের স্বাভাবিক অবস্থায় সেই কবিতা কবি পাঠ করেন l নিজের লেখা কবিতা কবির নিজের কাছেই দুর্বোধ্য ঠেকে l কবিতায় ব্যবহৃত কিছু বাক্যকে তিনি 'অকেজো' মনে করেন, যদিও চিত্রকল্পের কিছু ব্যবহার 'দুরন্ত' বলে মনে হয় l "বিচিত্র খেয়ালী দুর্বোধ্যতা" কবিতাটিকে যেন গ্রাস করেছে - এমনটা মনে হয় কবির l সবকিছু মিলে নিজের রচনাকে ঘিরে কবির মধ্যে এক হতাশাবোধের জন্ম হয় l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !!