সৃষ্টির শুরু থেকে সৃজনকাজ চলে আসছে । স্রষ্টা একাধারে প্রকৃতি ও মানুষ । অন্যদিকে মানবের অনুসন্ধানী মন সৃষ্ট কর্মের চুলচেরা বিশ্লেষণে সদা নিয়োজিত ।
এই বিশ্লেষণের অনেক অনেক ধারা, অনেক অভিমুখ । মানুষের বিচিত্র মানসিক গঠন, তার আনুগত্য ও অনুসরনের নানা অভিমুখ সৃষ্টিতত্বের বিশ্লেষনে নিয়ে আসে অনেক অনেক বিকল্প স্রোত । কখনো সদর্থক, কখনো বা নেতিবাচক উভয়প্রকার প্রতিক্রিয়া চলে । গ্রহণ, বর্জন, সংশোধনের মধ্যে দিয়ে মানবজাতির পথ চলা । কোন্ টা যে ঠিক, কোন্ টা যে ভুল, কখন স্বচ্ছ জলে আর কখন যে ঘোলা জলে তার বিচরণ - তারও বিচার বিশ্লেষন চলে । এ এক নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া ।
"রাতশেষের বিজ্ঞাপন" রচনায় কবি তামান্না ফেরদৌস এর ভাবনা এই সবকিছু ঘিরে আবর্তিত হয়েছে । মানুষের, প্রকৃতির যা কিছু সৃষ্টি তা একটা প্রতিবিম্ব রচনা করে । পরবর্তী প্রজন্ম নিজের মানসিক গঠন, পছন্দ অনুসারে তার মূল্যায়ন করেন । কেউ তার মধ্যে সদর্থক বিষয়গুলি আবিষ্কার করেন । কেউ বা তার কঠোর সমালোচনা করেন । কেউ মধ্যমপন্থী, কেউ বা সুবিধাবাদী - উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরেন ।
এইভাবে কবেকার, কোন কালের সৃষ্টি প্রতিপাদ্য হয় গবেষণার বিষয় হিসাবে । গবেষনায় প্রতিপাদ্য বিষয়ের নানান অভিমুখ সামনে আসে । সুন্দর, নিটোল, অপ্রাকৃত নৈসর্গিক । মানুষের এই সন্ধান যতো গভীরই হোক, তবু সৃষ্টির সব রহস্য তার কাছে শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে যায় । তাই এই খোঁজ এরও কোনো শেষ নেই ।
একটি সৃষ্টি শেষ হওয়া মাত্র যেন বিজ্ঞাপন এসে যায় তার বিষয়ে অনুসন্ধান ও মূল্যায়ন শুরু করার । মানুষ অভ্যাসবশেই তা করে যায় । তার ধৈর্য, নিষ্ঠা, সম্পদ এর শেষ কণা সে নিয়োজিত করে এই সন্ধানকাজে । এক একটি যুগের অবসান হয়, মোম পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তবু মানুষের অনুসন্ধিৎসা বেড়েই চলে, অনন্তকাল ধরে সৃষ্টিরহস্যের উন্মোচনে সে সক্রিয় থাকে ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ! ! |