প্রেম ভালোবাসা মানবিক গুণ l নর এবং নারী পরস্পরের প্রতি অনুভব করে l যখন একজন পুরুষ ও নারী কোনো কারণে পাশাপাশি আসে, কথা বলে, জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রে কাজের সূত্রে বা অন্য কোনো কারণে কিছুটা পথ একসাথে চলে, তখন তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার বোধ জাগ্রত হয়ে যেতে পারে l কিন্তু একে অপরের কাছে সেই ভালোবাসার অনুভব প্রকাশ করা বিষয়টিও সহজ নয় l মনের মধ্যে অনেক দ্বিধা, সংশয় ভিড় করে আসে l অগ্রপশ্চাৎ নানা চিন্তা, সেই চিন্তা ঘিরে নানা আশঙ্কা মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে l যখন কোনো মানুষ প্রথম প্রেমে পড়ে, তখন তার মন ঘিরে চিন্তা ভাবনার যে স্রোত কাজ করে যায়, সেই ভাবনাগুলিকে সংহত করে কবিতার আকার দিতে চেয়েছেন কবি আজনাদ মুন তাঁর 'পূর্ব স্মৃতি" রচনায় l
ভালোবাসা একটি আবেগ l কোনো একজনের প্রতি মন দুর্বল হয় l তাঁকে পেতে ইচ্ছা করে একেবারে নিজের মতো করে l কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরো নানা চিন্তার উদয় হয় মনে l কথাবার্তা চলতে থাকে l কিন্তু তাকে নির্দিষ্ট দিশা দেবার জন্য যে আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন, তার অভাব থাকে l হৃদয়ের ভালোবাসা মুখের কথায় ফুটে ওঠে না l অনেক বাস্তবিক ভাবনা দানা বাঁধে l একদিকে যেমন ভালবাসা ঘিরে একগুচ্ছ স্বপ্ন মনের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে, তেমনই এই ভালোবাসার প্রতি তারা কতটা দায়বদ্ধ সে প্রশ্নও ওঠে মনে l সন্দেহ, সংশয় জাগে যে অপরপক্ষেও ভালোবাসার উদয় হয়েছে কি না l হলেও তার গভীরতা কতখানি l নিবেদিতপ্রাণ কতটা ! অগ্রপশ্চাৎ নানা চিন্তায় কোনো পক্ষই সাহস করে তা নিশ্চিত করার প্রয়াস করে না l এমনি করেই কতো প্রেম, কতো সম্পর্ক গড়ে ওঠার সুযোগ পায় না শুধু একটু উদ্যোগের অভাবে, কোনো পক্ষই তার প্রেম নিবেদন করতে পারে না l মনের মধ্যে ভাবনার আলোড়ন হতে থাকে l অনেকটা সময় পাশাপাশি থেকেও, পরস্পরকে আপন জেনেও, ভবিষ্যতকে ঘিরে নানা দ্বিধা, সংশয়কে জয় করে উঠতে পারে না অনেক প্রেমিক প্রেমিকা l নিজেদের প্রেমকে পাগলামি বলে মনে হয় l বিশ্বাস, ভরসা থাকে না অপর পক্ষের ভালবাসার প্রতি, তার দায়বদ্ধতার প্রশ্নে l ফলে সম্পর্ক পরিণতি পায় না l
কিন্তু নিজের মনের ভেতর ভালবাসা লালন করে যায় দুজনই l জীবনভর তার স্মৃতি বহন করে যেতে হয় l একপক্ষ জানতেই পারে না অপর পক্ষের মনের প্রকৃত অবস্থান - পরস্পরের কাছে কতটা মূল্যবান ছিল তারা l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !