জগতসংসার চলে তার নিজের মতো l এখানে আনন্দ আছে l বিষাদ আছে l সততা আছে l অভিনয় আছে l সব মিলে জীবন তার নিজস্ব গতিতে বয়ে যায় l "সরষে ফুল" রচনায় কবি জ্যোতির্ময় রায় মানবজীবনের, জগতসংসারের এই বহুবিচিত্র গতিময়তা বিষয়ে আলোকপাত করেছেন l
মানুষের চলমানতায় জগত সচল l সেই মানুষ যাদের অনেকেরই মনোবাসনা পূরণ হয় না l জীবন থেকে যা প্রাপ্তি হলে জীবনকে সার্থক বলে মনে হয়, বহু বহু মানুষের কাছে তা অধরা থাকে l তবু তাঁরা বেঁচে থাকেন l জীবনকে টেনে নিয়ে যান সম্মুখপানে l মানুষের ভিড়ে, মানুষের মিছিলে এই জীবন্মৃত মানুষের সংখ্যাই বেশি l অনেক দুঃখ, হতাশার জীবন তাঁদের l তবু কখনো তাঁদের জীবনেও খুশির মুহূর্ত আসে l হাসির ঝলক খেলে যায় l মনে হয় জীবন নতুন উদ্যমে নতুন করে শুরু করা যায় l শুরু হয় জীবনযাপনের স্বার্থে বিকিকিনির বাজার l এইভাবে কখনো দুঃখ, কখনো আনন্দ, কখনো রোদ, কখনো তুষারপাত, রাজপথে মানুষ সমাগম এবং যাবতীয় বিপণন চলতে থাকে l
যাবতীয় সমস্যা বিপর্যয় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলার কৌশল আয়ত্ত করতে হয় মানুষকে l প্রচন্ড শীতে উনুনে হাত পা সেঁকে নিজেকে অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করার মতো উপযুক্ত করে তোলে সে l জীবনসংসারকে বুঝতে শেখে l চারিদিকে রঙবাহার বিজ্ঞাপনী বিপণন l কিছুটা সত্য, তার সঙ্গে অনেকটা মিথ্যা মিশিয়ে রঙদার মিতালি রহস্যে জগত সেজে ওঠে l দ্রব্যগুণ ছাপিয়ে কথা বিক্রি হয়ে যায় l মানুষকে এর মধ্যে বেঁচে থাকতে হয় l সহাবস্থান করতে হয় l সব জেনেবুঝেও তার শিকার হতে হয় l
এভাবেই দু-মুখো মানুষের ভিড়ে, নানা বিচিত্র জটিলতার মধ্যে দিয়ে সভ্যতা গড়ে ওঠে l সত্য থাকে একদিকে l মানুষ তার প্রয়োজনে সেই সত্যকে নানাভাবে প্রকাশ করেন l বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যায় রাজপথ l বিপণন স্বার্থে পৃথিবীর মানচিত্র বদলে যায় l
কবিকে জানাই শুভকামনা !!