যার শুরু আছে, তার শেষও আছে l যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অনিবার্য l সকলেই এই সার কথা জানেন l তবু মৃত্যুর কথা এলে কেমন যেন ভিতরটা কেঁপে ওঠে l কিছুতেই মৃত্যুকে মেনে নেয়া যায় না l প্রতিটি জন্ম একেকটি পরিবারে যেমন খুশির লহর নিয়ে আসে, প্রতিটি মৃত্যু তেমনই শোকসাগরে ভাসিয়ে দিয়ে যায় l এর মধ্যে দিয়েই, এই সত্যের সম্মুখীন হয়েই আমাদের চলতে হয় l যাঁরা কখনো পরিবারের অংশ হিসাবে ছিলেন, এখন নেই, পারলৌকিক জগতে চলে গেছেন, তাঁদের স্মরণে, মননে দিন কাটে আমাদের l তাঁদের জীবনের নানা ঘটনা স্মৃতির আঙিনায় ভিড় করে l এবং সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু নিয়ে এক আশঙ্কা কাজ করে যায় l
"মৃত্যু বড় লাগে ভয়" রচনায় কবি শাহিন আলম সরকার এভাবেই মৃত্যুকে ঘিরে তাঁর কিছু ভাবনা ব্যক্ত করেছেন l একদিন এই ভালোবাসার, কর্মের জগত ছেড়ে চলে যেতে হবে এই ভাবনায় মুখের হাসি যেন মিলিয়ে যায় l মৃত্যুভয় গ্রাস করে মনকে l সকল আপনজন, প্রিয়জনকে ছেড়ে চলে যেতে হবে এই বিরহবেদনা আচ্ছন্ন করে রাখে সমগ্র সত্তাকে l তবু মৃত্যু তো নিয়মিত হানা দেয় l একে একে পরিবারের বয়স্কজনেরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বিদায় নেন l সব মেনে নিতে হয় l কিছু করার থাকে না l তাঁদের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকি আমরা l দাদু, বড়ো দাদু নিজের নিজের সময়ে বিদায় নিয়েছেন l পরজগতে তাঁরা আবার মিলিত হয়েছেন কি না কে জানে ! বাবা, কাকা সব দূরে দূরে ভিন্ন ভিন্ন শহরে বাস করেন l দেখাসাক্ষাৎ কম l তবু তো মোবাইলে কথার মাধ্যমে যোগাযোগ থাকে l কিন্তু মৃত্যুর মাধ্যমে যখন বিচ্ছিন্নতা আসে, তখন যোগাযোগের আর কোনো উপায় থাকে না l
কবরখানা বেশি দূরে নয় l বাড়ি থেকে মাত্র তিনটে ক্ষেত পেরিয়ে l জীবনের অবসানে বর্তমানের আবাসস্থল ছেড়ে সেই বাড়িতে চিরশয়ানে যেতে হয় l সেখানে লক্ষ লক্ষ জন বাস করেন l এই বাড়ি থেকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেই সেখানে যাত্রা l সকলের জন্যই এক নিয়ম l একদিন পৃথিবীর সব কিছুকে পর করে দিয়ে সকলকেই সেই বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করতে হবে l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !!