কবিতা কবিকে কখনো ছেড়ে যায় না l কবি শিবশংকর "জানি হবে ভোর'' রচনায় কবির সৃষ্টি কিভাবে মানবজাতিকে জীবনযাপনে উদ্দীপিত করে তার আভাস দেবার প্রয়াস করেছেন l
মানুষ কোনো অবস্থাতেই এতটা অসহায় হয় না যখন সে অন্য কারো সহায় হতে পারে না l মানুষ শুধু তার পশুশক্তি ও অর্থশক্তির দ্বারা বলীয়ান নয় l এর বাইরেও তার আছে এমন কিছু অপার্থিব শক্তি যার দ্বারা সে এমন কিছু সৃজন করে যা যুগ যুগ ধরে মানবজাতিকে আনন্দ, প্রেরণা, দিশা ও পূর্ণতা দান করে যায় l
কবিতা এমনই এক সৃজনশীল কর্ম l কবি কবিতা লেখেন l কিন্তু কবি প্রথমত যেহেতু একজন মানুষ, তাই তাঁকেও মানবিক নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় l কবির জীবনেও দুঃখ আসে l দুঃখ আঘাতে তাঁর হৃদয়ও রুক্ষ মরুভূমিতে পরিণত হয় l কিন্তু একজন কবি ব্যক্তিগত এই দুঃখ বেদনাকে তাঁর রচনার মাধ্যমে এক সার্বজনীন রূপ দেন l যেন সকলের চোখের জল মিলিত হয়ে এক কাব্য প্রবাহ বয়ে যায় l সেই প্রবাহে অবগাহন করে এক অনির্বচনীয় ভাবের গভীরতায় সকলের হৃদয় ভরে ওঠে l
কখনো আঘাতে আঘাতে কবি এতটাই বিষন্ন বিমর্ষ হয়ে পড়েন যেন শোকে পাথর হয়ে যান l সেই শোক বুকে নিয়ে কবি যখন কবিতা রচনা করেন, যেন বহু শোকার্ত হৃদয় প্রজ্জ্বলিত হয় l কবির শোকের সঙ্গে তাঁর পাঠককুল একাত্ম বোধ করেন l হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয় মিলে শোকের অনলে জীবনপ্রদীপ জ্বলে ওঠে l
কখনো কবির মন এত প্রসন্ন থাকে, ভাবে কল্পনায় কবি এতটাই সমৃদ্ধ থাকেন, তাঁর এক একটি রচনা যেন অসাধারণ উচ্চতায় পৌঁছে যায়, যেন মহাশূন্য স্পর্শ করে l রূপ, রঙ, রসে পূর্ণ তাঁর সাহিত্যসুধা পান করে পাঠককুল যেন মহাশূন্যে ভাসার অনুভব পান l
মনের যে কোনো অবস্থাতেই কবি যা রচনা করেন তা মানবজাতির জন্য এক সুন্দর সকাল নিয়ে আসে l কবিতা প্রেমিকার মতো সর্বদা কবির সঙ্গে থাকে এবং তাঁকে নব নব সৃজনের প্রেরণা দান করে l
কবিকে জানাই শুভকামনা !!