মানুষ সৌন্দর্য্যের উপাসক । প্রকৃতির মাঝে সদাই সে সৌন্দর্য্যের সন্ধান করে চলে । জীবন সংগ্রামে ক্লান্ত মানুষ একটু শান্তি, একটু বিনোদনের আশ্রয় খোঁজে প্রকৃতির অনন্ত সৌন্দর্য্য ভান্ডারে।
চাঁদ, তার সোনালী জ্যোৎস্না - যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে সৌন্দর্য্যের অন্যতম উৎস হয়ে আছে । নিজ কল্পনায় মানুষ নানাভাবে চাঁদের আলোকে গ্রহণ করেছে । তাঁর দৃষ্টিতে পেয়েছি নানান উপস্থাপন ।
কবি কামরুল ইসলাম ফরহাদ 'চাঁদনী' কবিতায় চাঁদের আলোকে ঘিরে তাঁর অনুভব, অভিজ্ঞতার কথা মেলে ধরেছেন । জ্যোৎস্না রাতে চাঁদের সঙ্গে তিনি বন্ধুত্ব করতে চান । এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে প্রতিটি চাঁদনী রাতে । এজন্য তিনি বাকি সকলকেও আহ্বান করছেন । বিশ্বভুবন জুড়ে চাঁদের যে সোনালী কিরণ ছড়িয়ে আছে তার মধ্যে অবগাহন করবেন তিনি । জ্যোৎস্নার রঙ গায়ে মাখবেন এবং তার সঙ্গে একাত্ম হবেন । চাঁদের রঙ গায়ে মেখে তিনি এক সুখানুভূতি লাভ করেন । তিনি ভুলে যান সারা দিনের পরিশ্রমের ক্লান্তি । পার্থিব জীবনের শোক, তাপ, ক্রোধ, উত্তেজনা তিনি বিস্মৃত হন । মনের যাবতীয় অন্ধকার দূরীভূত হয়ে এক আনন্দ উজ্জ্বল অনুভূতি লাভ করেন তিনি । চাঁদের সোনালী আলো প্রবেশ করে তাঁর অস্তিত্বের গভীরে এবং সব ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে এক প্রত্যাশার আলোয় তিনি উদ্ভাসিত হন । চাঁদ যেন তাঁর ভাগ্যলিপি নতুন করে রচনা করে দেয় । তাঁর কপালে এঁটে দেয় ভাগ্যলক্ষ্মীর টিপ । এতে করে কবির কল্পনাশক্তি উৎসাহিত হয়। তাঁর অনুর্বর জমিতে ফুটে ওঠে সৃষ্টির নতুন ফুল । অনেক অনেক সৃষ্টি রচনা করে যান তিনি । দেশে দেশে তা সমাদৃত হবে বলে তিনি স্বপ্ন দেখেন ।
চাঁদের আলোয় যে মায়াবী পরিবেশ রচিত হয় তা অনেক শিল্পীকেই মোহিত করে এবং তাঁরা সুন্দরের আরাধনায় নিমগ্ন হয়ে নিজ নিজ সৃষ্টিতে নিয়োজিত হন । চাঁদের আলোর মায়াময় আলোছায়ায় কেউ কাওয়ালী গান, কোনো দূরদেশে মাঝি নিজের অজান্তেই গেয়ে উঠেন ভাটিয়ালী গান । সমগ্র পৃথিবী জুড়ে এক মোহময় পরিবেশ রচিত হয় ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ।