"লাশকাটা ঘরে" কবিতায় কবি ডলি পারভীন
কবিকল্পনায় ভর করে এক চূড়ান্ত পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছেন দুটি প্রেমিক মনকে l ভালোবাসার চরমতম পরীক্ষা l যে ভালোবাসার মানুষটিকে ঘিরে সব স্বপ্ন আবর্তিত হয়, সেই মানুষটিকে যদি পরম আপনার করে পাওয়া না যায়, তবে কল্পনার আশ্রয়ে ইহজীবনের শেষে তারই হাতের পরশ পাবার আজব, রোমান্টিক কল্পনা l শুধু হাতের স্পর্শ নয় l সমস্ত মনপ্রাণ জুড়ে এক আলোড়ন l অতীত ভালোবাসার মানুষটিকে নিথর সামনে দেখে মনের মধ্যে যে আলোড়ন আসবে, তাকে কেমন করে সামলে উঠবে একজন প্রেমিক মানুষ ? কোন্ সত্তাটা তার প্রাধান্য পাবে l কর্তব্যবোধপরায়ণ এক চিকিত্সক সত্তা, নাকি তার প্রেমিক সত্তা l লাশকাটা ঘরে একজন চিকিত্সক অনেক পোস্টমর্টেম করেন l প্রায় প্রতিদিনই তাঁকে হয়তো এই কাজ করতে হয় l পেশাগত দক্ষতা, আন্তরিকতা ও মানসিক নিরাসক্তি নিয়ে দিনের পর দিন তিনি এই কাজ করে যান l কিন্তু একদিন যখন সেই চিকিত্সক দেখবেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণে তাঁরই প্রাক্তন প্রেমিকা লাশকাটা ঘরে, তাঁর ওপরই পড়েছে পোস্টমর্টেমের দায়িত্ব, তখন সেই চিকিত্সকের মনের অবস্থা কেমন হবে ? তিনি বিষয়টি কিভাবে সামলে উঠবেন ? তিনি কি পেশাদার চিকিত্সকের মতো নিরাসক্ত মন নিয়ে মরদেহে অস্ত্র চালাতে পারবেন ? তাঁর হাত কি কেঁপে উঠবে না ? প্রেমিকার সঙ্গে তাঁর অতীত দিনের সম্পর্কের কথা ভেবে তাঁর চোখে কি জল আসবে না ? তিনি কি একটু হলেও ভয় পেয়ে যাবেন ? এক অস্বাভাবিক অনুভব থেকে তিনি তাঁর কর্তব্য সম্পাদন না করে সেখান থেকে কি পালিয়ে বাঁচবেন ? নাকি এ সবই কবির মিথ্যা কল্পনা ? হয়তো পেশাদারিত্বেরই জয় হবে l কঠোরভাবে নিজের মনের সমস্ত দুর্বলতা অতিক্রম করে অস্ত্রোপচার করবেন সেই চিকিত্সক l তাঁর প্রতি ন্যস্ত পোস্টমর্টেম এর গুরুদায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করবেন l
একটি কল্পিত ঘটনার সাপেক্ষে মানুষের প্রেমিক মন যে দোলাচলের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে তার রোমান্টিক চিত্র অঙ্কন করেছেন কবি l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা l