প্রেম যেমন সুখ দেয়, তেমন যন্ত্রণাও দেয় । সব প্রেম তো পরিণতি পায় না । নিজের চোখের সামনে নিজের প্রেমকে অপরের কাছে চলে যাবার দৃশ্য দেখা এক নিদারুন মানসিক যন্ত্রণার বিষয় । এমন অভিজ্ঞতা যে কোনো প্রেমিকের কাছে বেদনার । সেই বেদনাই ফুটে উঠেছে কবি মনোজ হালদার রচিত "যন্ত্রণার কারাবাস " কবিতায় । কিন্তু ভালোবাসার মর্যাদা রেখেছেন কবি । যাকে ভালোবাসেন তার মঙ্গল চান । তার মঙ্গল কামনা করেন । নিজের চোখের সামনে তাকে অন্যের কাছে চলে যেতে দেখেও, সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মনে ভীষন কষ্ট বেদনা পেলেও প্রিয়তমার মঙ্গল কামনা করেছেন তিনি । নিজের ভাগ্যের সুখ তার জন্য উপহার দিতে চেয়েছেন ।
যাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা হয়, তার বিদায়ে বুক ফেটে কান্না বেরিয়ে যায় । যাকে একেবারে নিজের বলে ভাবা হতো, আজ সে অন্যের জীবনসাথী হতে চলেছে । সেটা সামনে থেকে দেখতে হচ্ছে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে । ভাগ্যের এমনই পরিহাস । নিজের হবু জীবনসাথী আজ অন্যের গলা ধরে বসে আছে এমন দৃশ্য দেখার চেয়ে যেন মৃত্যুও ভালো ছিলো । নিশ্চয় বিষয়টিতে ভগবানের অনুমোদন আছে । তিনি হয়তো কোনো ভুলের শাস্তি দিচ্ছেন কবিকে এবং কবির কষ্ট দেখে মজা পাচ্ছেন । কবির কিছু করার থাকে না । নিজের ভেতরে কষ্ট সহ্য করতে থাকেন ।
এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য কবি মৃত্যু কামনা করেন । আপাতত কষ্ট ভোলার জন্য কবিতা লিখতে থাকেন । কবিতার মধ্যে তাঁর সমস্ত দুঃখ ব্যথা উজাড় করে দেন । কিন্তু তবু কবি তাঁর প্রিয়তমার মঙ্গল কামনা করে যান । তাঁর মৃত্যুর পরও কেউ যাতে তাকে কষ্ট না দেয় এই প্রার্থনা করে যান । মৃত্যুকালেও এই প্রার্থনা করে যান তিনি । তাঁর ভাগ্যের সমস্ত সুখ তিনি তাঁর প্রেমিকাকে উৎসর্গ করে যান । তাঁর প্রিয়া যেখানেই থাকুক, সুখে থাকুক, যে সংসারেই থাকুক সেই সংসার আলো করে থাকুক, এই প্রার্থনা করে যান তিনি । এটাই হবে তাঁর মৃত্যুকালীন সান্ত্বনা ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ।