কবি শ্যামলেন্দ্র চক্রবর্ত্তী "ঘোমটাঢাকা মুখ" রচনায় আধুনিক জীবনের এক দৈনন্দিন সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছেন বলে মনে হয় l
পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ সব দিকেই পথ খোলা l যে কোনো দিকেই যাওয়া যায় l তবু মানুষ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে পথ নির্বাচন করে l তারপরেও যাত্রা যে পুরোপুরি নিরাপদ হয়, এমনও জোর করে বলা যায় না l কারণ কোন রাস্তায় কোথায় মুখ ঢেকে বিপদ অপেক্ষা করে বসে আছে, আগে থেকে সঠিক সংবাদ পাওয়া যায় না l কখনো দেবালয়ের পথ নিরাপদ মনে করা হয়, কখনো বা অন্য কোনো পথ l পথের দুপাশে কোথাও ফুলের বাগান, কোথাও বা বৃক্ষরাজি, জলপথ, কিংবা স্থলপথ, সব পথ নিরাপদ, আবার সব পথই বিপজ্জনক l কোনো দিব্যি নেই যে একটি বিশেষ পথ দিয়েই যেতে হবে l কিন্তু যে পথ দিয়েই যাওয়া হোক, শেষ পর্যন্ত তা গোপন থাকে না l জানাজানি হয়ে যায় l জানাজানি হয়ে গেলেই থাকে বিপদের আশঙ্কা l ফলে সম্মান ও জীবন বাঁচানোর যে প্রয়াস থাকে, তার কতখানি সফল হয়, নিশ্চিত করে বলা যায় না l কোথাও খলখল হাসি, হয়তো কোনো দুষ্টের, কোথাও গোঙানো ব্যথার শব্দ, হয়তো কোনো বিপন্নের - জীবনের চলার পথে এসব যেন অনিবার্য হয়ে ওঠে l যা কিছুই হোক, চায়ের আসরে তা নিয়ে তুফান ওঠে l নানা দৃষ্টিভঙ্গির আলোচনা হয় l অপরাধীরাও সমাজে শালীনতা ও শোভনতার পোশাক পড়ে ঘুরে বেড়ান l এই দেখেই আমরা অভ্যস্ত l কিলবিল করছে এমন কীটেরাও যেন ঘোমটা দিয়ে তাদের পরিচয় আড়াল করে l এভাবেই আমাদের জীবনের পথে চলতে হয় l পথের বিপদ জেনেও ঘরে বসে থাকতে পারি না l আত্মরক্ষার যাবতীয় প্রযত্ন করে পথে বেরুতে হয় l যতটা সম্ভব নিরাপদ সড়ক খুঁজে নিতে হয় l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !!