কবি এস এম আলতাফ হোসাইন সুমন এর "একুশের চেতনা" রচনাটি নিসন্দেহে বিষয়গৌরবে উজ্জ্বল l ভাবগভীরতা, প্রকাশভঙ্গি, শব্দের খেলা, আবেগঘনতা সন্তোষজনক l কবি সঠিকভাবেই বলেছেন একুশ বাঙ্গালীদের চেতনা l একুশ এক সু-মধুর বেদনা, সৃষ্টি সুখের মন্ত্রনা এবং বাংলা মায়ের কান্না। একুশ বাংলা বর্ণমালার গর্ব, সাহিত্যের উত্স ও বাঙালির অহংকার l একুশ এক আন্দোলনের নাম, যুগে যুগে ছাত্রদলের উন্মাদনা l একুশ বৃদ্ধ মায়ের অশ্রূ ঝড়া করুন মুখ, ভাই হারানো আর্তনাদের শক্ত বুক। একুশ একটি ভাষার সমার্থক l রক্তে গড়া দেশের স্মরণ করায় বারংবার l একুশ আমাদের পৈতৃক অধিকার, মাতৃভাষা শেখার অঙ্গীকার l আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের এক নাম হলো একুশ l মাতৃভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি করে একুশ এক ইতিহাস রচনা করেছে l পৃথিবীর সব ভাষাকে মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার পথ দেখিয়েছে l একুশ আজ তাই আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য l
সুন্দর এই রচনাটির কিছু অসঙ্গতি নজরে এলো l পঙক্তিতে পঙক্তিতে পর্ব বিভাজনে মাত্রার সংখ্যার সামঞ্জস্য নেই l যেমন প্রথম স্তবকে প্রথম তিনটি পঙক্তিতে ৪ ও ৭ মাত্রার দুটি পর্ব l কিন্তু চতুর্থ পঙক্তিতে এসে ৪ ও ৬ মাত্রা হয়ে গেল l
দ্বিতীয় স্তবকে এসে যথাক্রমে পঙ্ক্তিগুলিতে পেলাম ৪-৪, ৪-৩, ৪-৪, ৪-৩ মাত্রা l
তৃতীয় স্তবকে ৪-৪, ৪-৩, ৪-৪, ৪-৪ মাত্রা l কবিতা জুড়ে এই অসামঞ্জস্য বর্তমান l ছন্দোবদ্ধ কবিতায় পঙক্তিতে পঙক্তিতে পর্বে পর্বে মাত্রার সংখ্যা এমন অনিয়মিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় l
কিছু বানান :
স্বাধীকার - স্বাধিকার
সেখার - শেখার (পরের পঙক্তিতেই 'শেখার' ব্যবহৃত হয়েছে l)
স্বাক্ষী - সাক্ষী
বৃদ্ধ মায়ের - বৃদ্ধা মায়ের
অশ্রূ ঝড়া - অশ্রু ঝরা
করুন মুখ - করুণ মুখ
স্বরণ করায় - স্মরণ করায়
কবিকে বিষয়গুলির প্রতি যত্নবান হবার পরামর্শ দিব l কলম চলমান থাকুক, অনেক অনেক ভালো রচনা কবিতার পাতা ভরিয়ে তুলুক - এই প্রত্যাশা রাখি l