জীবন কি ? কতোজন কতোভাবে দেখেছেন । দর্শনের পর দর্শন রচিত হয়েছে । তবু শেষ কথা বলা হয় না কখনও । কবিদের অত দর্শন জেনে কাজ নেই । তাঁরা জাত দার্শনিক । নিজ নিজ মতো জীবনকে দেখেন । সেই বিশ্বাসে লিখে যান । জীবনযন্ত্রনার কথা বলেন । জীবন আনন্দের কথা বলেন । বন্ধনের কথা বলেন । বন্ধন থেকে মুক্তির কথা বলেন ।
কবি জীবন ভ্রমর এর বিশ্বাসে জীবন হলো এক যাপনের নাম । দুঃখযাপন । আর মুক্তির পথ হলো সেই দুঃখ থেকে বেরিয়ে আসা। দুটোই তার হাতে ।
দুঃখ মানুষের একটা বিলাস । সেই বিলাসের বাঁধনে সে জড়িয়ে থাকে । পৃথিবীর যাবতীয় মায়া, মমতা, মোহ এই বাঁধন রচনা করে । মানুষ স্বেচ্ছায় এই বাঁধনে জড়ায় এবং দুঃখ ভোগ করে তার থেকে এক ধরণের পরিতৃপ্তি লাভ করে । দুঃখের এই বাঁধনে জড়ানো বা তার থেকে মুক্তি লাভ করার বিষয়টি তাঁর স্বেচ্ছাধীন । নিজের ইচ্ছাতে সে এই বাঁধনে জড়িয়েছে । এবং নিজের ইচ্ছাতেই সে এই বন্ধন থেকে মুক্তি নিতে পারে ।
যখন মানুষ এতটা আত্মশক্তি লাভ করে যে সে জাগতিক এই মায়ার বন্ধন ত্যাগ করে, দুঃখের বিলাসযাপন পেরিয়ে চির আনন্দের খোঁজ পেয়ে যায়, সত্য ও সুন্দরের অভিযাত্রী হয়ে ওঠে, তখনই ইতিহাস রচিত হয় । ব্যক্তির পরিসীমা ছাড়িয়ে, সমস্ত রকমের সংকীর্ণতা পেরিয়ে মানুষ আকাশ সমান উদারতার অধিকারী হয় ।
বাঁধন ছেঁড়াতেই আনন্দ । দুঃখের পাঁজরে বন্ধনই জীবন । নিজের ব্যক্তিগত দুঃখবোধের সীমা পেরিয়ে জগতের মধ্যে আত্মলীন হওয়াই মুক্তি । একের কোলাহল সমষ্টির কোলাহলে মিশে গিয়ে নীরবতার আকাশ রচিত হয় ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা ! !