ছন্দে সুরে অসাধারণ সুন্দর প্রতিবাদী কাব্য l দস্যিপনা নয়, এ হলো নারীর সশক্তিকরণ l বিশ্ব জুড়ে যেভাবে নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে লোলুপ, কামুক অশুভ শক্তির দ্বারা, তথাকথিত কোমল পেলবতা থেকে বেরিয়ে এসে নারীকে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে এই হিংস্রতার প্রতিরোধ করবার জন্য l অন্যের উপর নির্ভরশীলতা নয়, নিজ শক্তিতে বিকশিত হয়ে উঠতে হবে নারীসমাজকে l প্রয়োজনে প্রতিরোধ করতে হবে l সমাজ একে দস্যিপনা বলে বলুক l পুরুষের ক্ষেত্রে যা সাহসের পরিচায়ক, নারীর ক্ষেত্রে তা যদি দস্যিপনা হয়, তবে ঘরে ঘরে এমন দস্যি মেয়ে জন্মগ্রহণ করুক l এমনই এক দস্যি মেয়ের গল্প আসরে পরিবেশন করলেন কবি মিনু গরেট্টী কোড়াইয়া (বৃষ্টিরানী) 'দস্যিমেয়ে' রচনার মধ্যে দিয়ে l সে মেয়ে সাজতে জানে l যখন পথে বেরোয়, পায়ে রাঙ্গা আলতা লাগায়, চোখে কাজল দেয়, রেসমী চুড়ি থাকে হাতে । আবার পথে বিপদ আপদ হলে তেমন লড়াই করতেও জানে l
দিন দুপুরে তাকে একলা পথে পেয়ে মানুষরূপী কিছু কুকুর যখন তাকে আক্রমণ করে, সেও নারীসুলভ পেলবতা থেকে বেরিয়ে এসে সাহসের সঙ্গে কালনাগিনী রূপে তাদের প্রতিরোধ করে l প্রতি আক্রমণ করে l পুরুষ আক্রমণকারীরা যেমন তাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে, সেও প্রতিদানে তাদের আক্রমণ করে তাদেরও রক্ত ঝরিয়েছে l হার স্বীকার করে নি l হেরে যায় নি l আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করেছে সে l সেই নোংরা মানুষগুলোই ভয় পেয়েছে l হার মেনেছে l পালিয়ে বেঁচেছে l উপযুক্ত শিক্ষা হয়েছে তাদের l
এই কাজটির জন্য মেয়েটির নিজের ওপর বিশ্বাস, শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেছে l লোকে যাই বলুক, তার এই দস্যিপনার জন্য সে গর্বিত l ভবিষ্যতেও এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে সে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে বদমায়েশদের l নিজের ওপর পুরো আস্থা আছে তার l আত্মরক্ষা করতে সে সক্ষম l তাই আগের মতই একলা পথে চলতে তার কোনো ভয় হয় না l সে আলতা পায়ে, কাজল চোখে রেসমী চুড়ি হাতে ঘর থেকে বেরোয় বটে l কিন্তু সঙ্গে থাকে তার দস্যিপনা, তার আত্মরক্ষার অমোঘ অস্ত্র l প্রতিটি মেয়ের এরকম দস্যি হয়ে ওঠাটা খুব জরুরি আজ l এই দস্যিপনাই জীবনের সব পর্বে তাকে আত্মরক্ষা করতে সাহায্য করবে, শোষণ বঞ্চনার প্রকোপ থেকে রক্ষা করবে l
নারীর সশক্তিকরনের পক্ষে অসাধারণ সুন্দর রচনার জন্য কবিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন !!