ভালবাসা মানুষের শক্তির উত্স l এবং দুর্বলতার l শক্তি শত বাধার মধ্যেও প্রিয়জনকে পাবার সংকল্পকে দৃঢ় করে l সহস্র ঝঞ্ঝা পেরিয়ে ভালবাসাকে অটুট রাখে l আর দুর্বলতা প্রিয়জনের সব দোষত্রুটিকে আড়াল করে l ভালবাসা নিঃশর্ত হয় l "জলের গভীরতা" রচনায় কবি নাজমা আক্তার ভালবাসার গভীরতা মানবজীবনে কি পার্থক্য গড়ে দেয়, তার চারিত্রিক দৃঢ়তা কিভাবে গড়ে ওঠে তার রূপরেখা অঙ্কন করেছেন l
অগভীর জল চঞ্চল l জলের গভীরতা যত বাড়ে তত তার স্থিরতা বাড়ে l মানবমন জলের সঙ্গে তুলনীয় l ভালবাসা যখন হয় অগভীর, তার বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না l চঞ্চল মন সামান্য কারণেই ভয় পেয়ে যায় l মন দুলে ওঠে l ভালবাসা নড়ে যায় l কিন্তু ভালবাসা যখন হয় গভীর, তখন মনের মধ্যে এমন শক্তির সঞ্চার হয়, কোনো ভয়ই মনকে দুর্বল করতে পারে না l ভালবাসা যখন বাধার সম্মুখীন হয়, সমাজ থেকে, পরিবার থেকে শাসানি আসে, মৃত্যুভয় দেখানো হয়, অন্ধকার ঘিরে ধরে চারপাশ থেকে, তখন ভালবাসার গভীরতা এই সকল বাধাকেই তুচ্ছ করে তোলে l ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমুদ্রসম প্রতিকূল পরিবেশেও ভালবাসা হার মানে না, ভয় পেয়ে দমে যায় না l এই শক্তির উৎস হলো নিখুঁত স্বভাবের ভালবাসা। ভালবাসাকে নিখুঁত হতেই হয় l কারণ ভালবাসা হয় নিখুঁত হয়, অথবা ভালবাসা হয় না l এর মাঝামাঝি কিছু নেই l প্রকৃত ভালবাসার উপলব্ধি তার নির্ভেজাল সত্ত্বার থেকেই আসে l এই উপলব্ধি বাঁচার প্রেরণাস্বরূপ, প্রতিটি প্রেমিকের শক্তিস্বরূপ l আবার এই গভীর ভালবাসা প্রেমিককে দুর্বলও করে তোলে l তার প্রিয়জনের প্রতি সে অন্ধ হয়ে পড়ে l তার কোনো ভুল, ত্রুটি, দোষ সে দেখতে পায় না l মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা যখন খুবই গভীর হয়ে যায়, তখন মানবজাতির সাধারণ দোষত্রুটিগুলি সেই মানবপ্রেমিকের নজর এড়িয়ে যায় l তিনি নিঃশর্তে মানুষকে ভালবাসতে পারেন l ভালবাসা তার অভ্যাসে পরিণত হয় l
কবিকে জানাই শুভকামনা !!