ছোট্ট কবিতা l বড়ো বক্তব্য l জীবন অনুধ্যান l "বৃথা আস্ফালন" শিরোনামে কবি আবু কওছর জীবনের সার ও অসার সন্ধান করেছেন l প্রতি মুহূর্তে এই পৃথিবীতে কতো নতুন জীবনের আগমন হয়ে চলেছে l একইভাবে কতো মানুষের জীবনদীপ নিভে যাচ্ছে প্রতি পলে l এই আসা আর যাওয়ার মাঝেরটুকু জীবন l মানুষ পার্থিব কিছুই নিয়ে আসে না, কিছুই নিয়ে যায় না l এই সার কথাটি জানা সত্বেও জীবন জুড়ে মানুষের কতো আস্ফালন চলে l কতো ভাগাড়ে জীবনের ঝুলি ভরে তোলা হয় l কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদায়বেলায় এই পার্থিব অর্জিত সম্পদ মানুষের কোনো কাজে আসে না l জীবন শূন্য থেকে যায় l জীবনের প্রকৃত যা অর্জন তা হলো পুণ্যকর্ম l ভালো কাজ, পরোপকার, দেশ ও সমাজের হিতসাধন, লোভবর্জন, মানবিক মুখ - এই পথে পুণ্য অর্জন করে জীবনের জুলি পূর্ণ করলে পরপারের যাত্রায় তবু সঙ্গে কিছু থাকে l
কিন্তু মানুষ জীবনভর লোভের বশবর্তী হয়ে অসার তর্জনগর্জন করে যায় এবং পরপারে অপ্রয়োজনীয় এমন মূল্যহীন আবর্জনা সঞ্চয়ে ব্যস্ত থাকে l এভাবে নিজের জীবনকে সে অসার করে তোলে l তার মন, মনন সর্বদা পার্থিব প্রাপ্তির চিন্তায় মগ্ন থাকে l ফলে প্রকৃত প্রাপ্তি তার অলভ্য থেকে যায় l
তারপর যখন শেষ ডাক আসে, এই মায়ার ভুবন ছেড়ে চলে যেতে হয়, তখন জীবনভর তার যতো আস্ফালন, তর্জন গর্জন, পার্থিব যা কিছু সঞ্চয়, সব বৃথা হয়ে যায় l শূন্য হাতে তাকে এই ভুবন ছেড়ে যেতে হয় l পরপারে যাত্রাকালে যা তার সম্পদ হতে পারত, মিথ্যা অহঙ্কারে জীবনভর সে সেগুলিকে অস্বীকার করে এসেছে l ফলে প্রাণবায়ু যখন তাকে ছেড়ে যায়, তখন সর্ব অর্থেই নিঃস্ব হয়ে সে এক অজানা ভুবনের উদ্দেশে পাড়ি দেয় l
আধ্যাত্মিক ভাবনায় পূর্ণ মনোরম রচনার জন্য কবিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন !!