কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন খ্যাতির মধ্যগগনে, বাংলা সাহিত্যজগতে তাঁর প্রভাব অসীম, তখন তিরিশের দশকের (১৯৩০-১৯৪০) কিছু কবি রবীন্দ্রবৃত্তের বাইরে বেরিয়ে, রবীন্দ্রপ্রভাব মুক্ত হয়ে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেছিলেন। পঞ্চপান্ডব বলে খ্যাত কবিগন ( অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ, বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত) এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যদিও পঞ্চপান্ডবের বাইরেও বেশ কিছু কবি এই আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন (সমর সেন, প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রমুখ, সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ) l
পঞ্চপান্ডব কবিদের মধ্যে বিশেষ করে বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত দুর্বোধ্যতার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন l তাঁদের কবিতার শব্দ, নানা অনুষঙ্গ, কষ্টকল্পনার উপমা, অতিরিক্ত মননচর্চা প্রভৃতি কবিতাকে সাধারণ পাঠকদের কাছে থেকে দূরে নিয়ে গিয়েছিল l কিন্তু জীবনানন্দ দাশের কবিতা ছিল একই সঙ্গে মনন ও হৃদয়ের মিশ্রণ l ফলে জীবনানন্দ দাশ এর কবিতা ছিল তুলনায় অনেক বেশি পাঠকপ্রিয় l
নিজের শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকায় জীবনানন্দ দাশ বলছেন, কবিতা কি সেটা জানার আগে বলা যায় কবিতা কতো রকমের l হোমার, মালার্মে, শেক্সপিয়ার, বদলেয়ার, রবীন্দ্রনাথ এলিয়ট - তাঁরা সবাই কবিতা লিখেছেন, কিন্তু তাঁদের সকলের কবিতা এক ধরনের নয় l কবি কেন কবিতা লেখেন ? এ বিষয়ে নানা মত আছে l একটি মত হলো, কবি হচ্ছেন সংস্কারক, সমাজের নানা দোষ, ত্রুটি, অন্যায়, অবিচার এর বিরুদ্ধে কবি তাঁর লেখায় সরব হবেন, মানুষকে সচেতন করে তুলবেন এবং এই পথে সমাজ সংস্কারিত হবে l অন্য মত হল, কবি শুধু রস সৃষ্টি করবেন, পাঠক তাঁর কবিতা পড়ে আনন্দ লাভ করবেন, সমাজ সংস্কার করা কবির কাজ নয় l
জীবনানন্দ দাশ কি ধরনের কবি ছিলেন ? অনেক পাঠক, সমালোচক জীবনানন্দ দাশকে বিভিন্নভাবে চিত্রিত করেছেন l শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকায় কবি জীবনানন্দ দাশ সে কথা উল্লেখ করেছেন l কারুর মতে তিনি একাকিত্বের কবি, নির্জনতম কবি। কেউ বলছেন তিনি প্রধানত প্রকৃতির কবি। কারুর মতে তিনি ইতিহাস ও সমাজ চেতনার কবি। আবার কেউ তাঁকে বলছেন নিশ্চেতনার কবি l কারো মীমাংসায় জীবনানন্দের কবিতা প্রতীকি, সম্পূর্ণ অবচেতনার, সুর রিয়ালিস্টিক l কেউ তাঁকে বলছেন প্রেমের কবি, উপমার কবি, মৃত্যু চেতনার কবি, স্বপ্নময়তার কবি, এমন নানান ব্যাখ্যা জীবনানন্দের কবিতা সম্বন্ধে এসেছে। কবি নিজে এর কোনটাকেই খারিজ করেননি l বলেছেন, এই সবগুলোই তাঁর কবিতার নিরিখে আংশিক সত্য, এর সবটাই কোন কোন কবিতা সম্বন্ধে বা কবির জীবনের বিশেষ অধ্যায় সম্পর্কে খাটে, কিন্তু এর কোনটাই জীবনানন্দ দাশের কাব্যের সামগ্রিক ব্যাখ্যা নয় l
'বোধ' কবিতা জীবনানন্দ দাশকে একাকিত্বের কবি বা নির্জনতার কবি হিসাবে পরিচয় দিয়েছে l বোধ শব্দের অর্থ সাধারণ ধারণা l শব্দটি বুদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, বোধ-বুদ্ধি l বোধ আমাদের চেতনাকে জাগিয়ে তোলে l এর ফলে আমরা যেমন মেধাবী হই, জগৎ জীবনের স্বরূপ বুঝে উঠি, তেমনই বোধের যন্ত্রণা কখনো কখনো আমাদের পীড়া দেয় l সমাজের অন্য সকল কিছুর প্রেক্ষিতে আমাদের নিজেদের অবস্থান নিয়ে আমাদের মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়, আমরা নিজের মনে মনেই প্রশ্নবিদ্ধ হই, উত্তর কখনো পাই, কখনো পাই না, চিন্তায় চিন্তায় আমরা দীর্ন হই, কখনো ডিপ্রেশনে কষ্ট পাই, এই সকল যন্ত্রণাময় প্রশ্ন থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাই, কিন্তু পারি না l
"আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে,
সব কাজ তুচ্ছ হয়—পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা—প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়।"
‘জীবনানন্দ স্বভাবের একটি জটিল সারল্যের কবিতা ‘বোধ’। সহজ-সরল বাক্যবন্ধের সম্মিলনে রচিত এ কবিতা। আপাত সরল বাক্যাবলীর মাধ্যমেই জটিল চিন্তা ঘনীভূত হয়ে উঠেছে; ধীরে ধীরে। ক্রমেই জটিলতম চিন্তার দুর্গম অঞ্চলে পরিণতি পেয়েছে। ব্যক্তি-বিশেষের স্ববিরোধ শিল্পের অঞ্চলে এক অনির্বচনীয় ঢেউয়ের নাম ‘বোধ’।
"আলো-অন্ধকারে যাই-মাথার ভেতরে
স্বপ্ন নয়, কোন্ এক বোধ কাজ করে ; ........
সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয় !"
কিন্তু সে বোধ কী? সে প্রশ্নের উত্তর মেলে না। অথচ দুর্বোধ্য সে অনুভূতিপুঞ্জকেই যেন গভীর মমতায় প্রকাশ্য করে তুলতে চেয়েছিলেন কবি।
‘সকল লোকের মাঝে বসে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা ?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধা ?
আমার পথেই শুধু বাধা ?’
উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, এ বৈশিষ্ট্য জীবনানন্দ দাশকে রোমান্টিক এবং সমকালীন আধুনিক কবিদের থেকে ভিন্ন, বিশিষ্ট এবং বিশ্লিষ্ট করেছে। এটিই তার মহত্তম আধুনিক কবিসত্তার শ্রেষ্ঠতম প্রকাশ। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, ঘৃণা, অবহেলা— সবই একজন মানুষের মনে কী করে একীভূত হয়ে এক অব্যক্ত বেদনারাশির জন্ম দেয়, তা-ই যেন এ কবিতার মূল বিষয়ে পরিণত। এটি আধুনিকতাবাদের নৈরাশ্য ও নিঃসঙ্গচেতনা কিংবা বিচ্ছিন্নতাবোধ এবং অলৌকিকতায় আস্থাহীনতার বৈশিষ্ট্যকে নিশ্চিতির রূপ দেয়। আপন চিত্তের চাঞ্চল্যের কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ কবি। বিস্ময় প্রকাশের ভাষা তার,
‘সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা একা কথা কয়!’ তার পরই বিস্ময়াভিভূত আপন হৃদয়ের কাছেই প্রশ্ন জমা রাখেন, ‘অবসাদ নাই তার? নাই তার শান্তির সময়?’ অসুখী মানুষ, জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতকে সহ্য করেও শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকার আকুতিই প্রকাশ করে। সাঁর্ত্রে কথিত অস্তিত্ববাদী চেতনার এ আরেক বিরল দৃষ্টান্ত। ‘গোধূলি সন্ধির নৃত্য’র সঙ্গে ‘বোধ’ কবিতার অন্তর্গত মিলের চেয়ে অমিলই যেন বেশি। যে অর্থে ‘ গোধূলি সন্ধির নৃত্য’ রাজনীতি সচেতন কবিতা, সে অর্থে ‘বোধ’ নয়। প্রথমটিতে ব্যক্তির সঙ্গে সমষ্টির যোগাযোগকে পূর্ণ করে তোলা হয়েছে, দ্বিতীয়টিতে ব্যক্তির একাকিত্ব, হাহাকারকে চাড়িয়ে দিয়েছেন মানব মনে।’
যে মানুষের চিন্তার জগত যত বেশি বিস্তৃত, সেই মানুষ তত অসুখী l তার কারণ যে মানুষের বোধ নেই তিনি কি পরিবেশে বাস করছেন, এবং তার চারপাশে কি সব ঘটে চলেছে তা তিনি বুঝতে পারেন না বা বুঝতে চান না, এই বিষয়গুলি তাঁকে পীড়িত করে না, তিনি তাই সুখী l
বোধ আমাদের নিয়ে যায় এক অবসন্নতার জগতে, বোধ আমাদের কখনো বিষন্ন করে l সেই বিপন্ন বিস্ময় বা বিষণ্ণতার আলোকে জীবনানন্দ দাশের বোধ কবিতা রচিত l কবিতার শুরুতেই কবি বলছেন তিনি যেখানেই যান, আলোতে বা অন্ধকারে, তাঁর মাথার ভেতর এক বোধ কাজ করে l আলো এবং অন্ধকার এখানে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক এর প্রতীক l কবিতার পরবর্তী স্তবকগুলোতে আমরা দেখব, কবির বোধ নেতিবাচক দিককেই তুলে ধরেছে l কবি বলছেন,
"স্বপ্ন নয় - শান্তি নয় - ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয় ;
আমি তারে পারি না এড়াতে l"
অর্থাৎ কবির বোধ তাঁকে স্বপ্ন দেখায় না, তাঁকে শান্তি দেয় না, তাঁকে এক অন্যরকম অনুভব দেয় যা ভালোবাসাও নয় l তাঁর হৃদয়ে এক বোধ জন্ম নেয় l এর ফলে কবির মনে হয়,
"সব কাজ তুচ্ছ হয়, পন্ড মনে হয়
সব চিন্তা - প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়
শূন্য মনে হয় l"
কবি মনে করেন সহজ লোকেরা যারা আহার নিদ্রা মৈথুন চক্রে আবর্তিত, তাঁরা সুখী l তিনি তাঁদের মত নন l তিনি শরীরে মাটির, জলের গন্ধ মেখে, ফসল বুনে, ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে, উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে থাকতে পারেন না l সকল মানুষ যা পারে, তিনি তা পারেন না, তাই তিনি একাকিত্বে ভোগেন l এটা তাঁর মুদ্রাদোষ l কবির মাথার ভেতরে স্বপ্ন, শান্তি ভালবাসা - এগুলো কাজ করে না। সব সময় এক বোধ কাজ করে যা তাঁকে বিষন্ন করে, সকলের থেকে আলাদা করে দেয় l এই বোধ তাঁকে জীবনকে পরিপূর্ণ বুঝতে সহায়তা করে, এবং জীবনকে যে যত বেশি বুঝবে, তার কাছে জীবনের অন্ধকারময় দিক ততো বেশি স্পষ্ট হবে l আর ততই জীবন যন্ত্রণাময় হয়ে ওঠে l
কবি স্বেচ্ছায় এ বোধ এর পথে চলতে চান না, তিনি চলার পথে এই বোধকে ছুঁড়ে ফেলতে চান, কিন্তু তিনি এই বোধকে এড়াতে পারেন না l
"উপেক্ষা করিতে চাই তারে
....
আছাড় মারিতে চাই,
....
তবু সে মাথার চারিপাশে,
তবু সে চোখের চারিপাশে
তবু সে বুকের চারিপাশে
আমি চলি, সাথে সাথে সেও চলে আসে !"
এই বোধ কবির অস্তিত্বের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে, কবিকে সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারছে l কবি তার থেকে মুক্ত হতে পারছেন না l এই বোধ আধুনিক মানুষের সমস্যা, এই বোধের কারণে অনেকে ডিপ্রেশনে চলে যান, তার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না l একাকিত্বে ভোগেন, যন্ত্রণা পান l
কবির মনে প্রশ্ন জাগে, এই পৃথিবীতে যারা সন্তান হয়ে জন্ম নিয়েছেন, পরে বড় হয়ে নিজেরাও সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, অর্থাৎ এ পৃথিবীর বংশধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, কবির হৃদয়, মন তাদের মত নয় কেন ? তিনি একাই কেন শান্তি পান না ? তাঁর বোধের জগত অন্য সকল মানুষের মতো নয় কেন ?
কবি ভাবেন, অনেক বিষয়েই তিনি অন্য সাধারন মানুষের মতো, তবু কেন তাঁর বোধ তাঁকে পৃথক করে রাখে l
"হাতে তুলে দেখিনি কি চাষার লাঙল ?
বালতিতে টানিনি কি জল ?
কাস্তে হাতে কতবার যায়নি কি মাঠে ?
মেছোদের মতো আমি কত নদী ঘাটে ঘুরিয়াছি ;
পুকুরের পানা শ্যালা আঁশটে গায়ের ঘ্রান গায়ে গিয়েছে জড়ায়ে ;
- এই সব স্বাদ ;
- এ সব পেয়েছি আমি"
কবি বলতে চাচ্ছেন তিনি সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করেছেন, সাধারণ মানুষের মতো কর্ম করেছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ জীবন থেকে যে আনন্দ, যে শান্তি, যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তিনি তা পাননি, তাই তিনি এই সবকিছু ছেড়ে চলে গেছেন এই সীমার বাইরে l জীবন নিয়ে তাঁর বোধ তাঁকে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে l
কবি নারীর সংস্পর্শে এসেছেন, তাকে ভালোবেসেছেন, অবহেলা করেছেন, ঘৃণা করেছেন l বিপরীতটাও হয়েছে, নারীরা তাঁকে ভালোবেসেছে উপেক্ষা করেছে, ঘৃণা করেছে l কিন্তু এই সম্পর্ক তাঁকে শান্তি দেয় নি l যে ভালোবাসা একসময় তার আরাধ্য ছিল সেই ভালোবাসাকে তিনি ভুলে গেছেন, ত্যাগ করে গেছেন l এই ভালোবাসা তাঁর কাছে ধুলো আর কাদা ছাড়া কিছু নয় l হয়তো ভাগ্যের দোষে তাঁর প্রেম পরিণতি পায়নি, কিন্তু সে সবকিছু তিনি পরে ভুলে গেছেন,
"নক্ষত্রের দোষ আমার প্রেমের পথে বারবার দিয়ে গেছে বাধা, আমি তা ভুলিয়া গেছি l
তবু এই ভালোবাসা - ধুলো আর কাদা - l"
তাই কবি সকলকে ছেড়ে, এমনকি দেবতাকেও ছেড়ে একান্ত তাঁর নিজের কাছে ফিরে আসেন বারবার l তাকে প্রশ্ন করেন,
"সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয় !
অবসাদ নাই তার ? নাই তার শান্তির সময় ?
কোনদিন ঘুমাবে না ? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবে না কি? পাবে না আহ্লাদ
মানুষের মুখ দেখে কোনদিন !
মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন !
শিশুদের মুখ দেখে কোনদিন l"
কবি নিজের বিবেক বা চেতনাকে প্রশ্ন করছেন, এই সৃষ্টির মূল যে তিনটি বিষয় - নর, নারী এবং শিশু - তাদের দেখেও তাঁর হৃদয় কেন তৃপ্ত হচ্ছে না ?
কবিতার শেষে কবি এই কটাক্ষ করছেন, এই পৃথিবীর পুরুষ, নারী এবং শিশু, তাদের দেখে যে তার হৃদয় তৃপ্ত হবে, সেই পুরুষ, নারী শিশুর মধ্যে কি সেই পবিত্রতা আছে ? যা দেখে তাঁর বোধ শান্তি পাবে, ভালোবাসার সন্ধান পাবে, সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে ?
না নেই, সেই পবিত্রতা নেই l কবি এই অবক্ষয়িত সমাজ থেকে মুক্তির পথ খুঁজছেন, তিনি চাইছেন নক্ষত্রের দিকে যেতে, আলোর দিকে যেতে,
"পৃথিবীর পথ ছেড়ে আকাশের নক্ষত্রের পথ চায়না সে ?"
কিন্তু সেই সম্ভাবনা কবি দেখছেন না l
"চোখে কালো শিরার অসুখ,
কানে যেই বধিরতা আছে,
যেই কুঁজ - গলগণ্ড - মাংসে ফলিয়াছে
নষ্ট শশা - পচা চাল কুমড়ার ছাঁচে,
যে-সব হৃদয়ে ফলিয়াছে
- সেই সব l "
নষ্ট শশা - পচা চাল কুমড়ার ছাঁচ, এগুলো হৃদয়ের অবক্ষয়িত রূপের প্রতীক, মানুষের হৃদয় পচে গেছে, মানবতা বিপন্ন, চারিদিকে অবক্ষয় চলছে, সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার মুখে, তাই কবি শান্তি পান না, স্বপ্ন দেখেন না, ভালোবাসা খুঁজে পান না, এই বোধ কবিকে বিষন্ন করে, একাকী করে l