প্রেম যতো মধুর, তার বিরহ অনুভব ততো তীব্র l তার আগমন নিজের ইচ্ছায় l বিরহীর ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল নয় l বিরহ বাতাস আবেগ ভরা মনের আকাশে উদিত হয়ে মাঝে মাঝেই মনটাকে নাড়া দিয়ে যায় l
কবি পল্লব চৌধুরীর রচনা "বিরহ বাতাস" প্রেমের সুন্দর স্মৃতির আভাসে ভাস্বর হয়ে উঠেছে l স্মৃতির ক্যানভাসে বিরহ অনুভব আসে, প্রকৃতির সঙ্গে মিলে গিয়ে কিছুক্ষণ নাড়িয়ে দেয় এবং চলেও যায় l চলে গিয়েও অনুভবে থেকে যায় l ভালোবাসার মৃত্যু হয় না l সম্পর্কের ইতি হলেও পুরোনো সম্পর্কের স্মৃতি তা বাঁচিয়ে রাখে, বিরহবিধুর যাতনা মাঝে মাঝেই পুরোনো প্রেমকে স্মৃতিপটে জাগিয়ে তোলে l প্রেম ও বিরহ যেন হাসি ও কান্নার মতো, শুক ও সারীর মতো অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত অস্তিত্ব l একটি থাকলে অপরটি থাকবেই l
বসন্তের আগমন মনকে দোলা দেয়, শিমুল পলাশ আবীর ফাগুয়ার বনে খেলে বেড়ায় । ঠিক তখনই প্রিয়ার কথা মনে পড়ে যায় এবং এক গভীর বিরহবোধ মনকে দোলা দেয় l
নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার বিষয় নয়, বিশেষ সময়ে বিরহ ভাব ফিরে ফিরে চলে আসে বিরহী প্রেমিকের মনে l বিশেষ করে যখন ফাগুন মাস আসে, বসন্তের বাতাস ঘরে ঢোকে, ন্যাড়া গাছে ফুল ফোটায়, পলাশ–শিমূল ডালে যেন আগুন জ্বেলে দেয়, কোকিল কণ্ঠে সুন্দর কুহু ডাক আকাশ বাতাসে প্রেমের আবেশ সৃষ্টি করে, তখনি পুরোনো প্রেমের স্মৃতি জেগে ওঠে মনে l স্মৃতিমেদুর মন দূর অতীতে ফিরে যায়, প্রিয়ার সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহুর্ত মনের পর্দায় ভেসে ওঠে এবং এক তীব্র বিরহ যাতনায় মন আবিষ্ট হয়ে যায় l একটি ফাগুনেই প্রেমের স্বাদ মিলেছিল l কিন্তু তবু তা ভোলার নয় l সময় তাকে গিলে খেতে পারে না l বারে বারে প্রতি ফাগুনে তার স্মৃতি মনকে বিরহ যাতনায় অস্থির করে তোলে l
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা l