সমাজের বুকে ঘটে চলেছে নানা অনাচার । পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব বলে পরিচিত মানুষ । তবু হেন কোনো কর্ম নেই, তা সে যতো হীন কাজই হোক, যা করতে তার হৃদয় বা হাত এতটুকু কেঁপে ওঠে । কবি মো. আবু ইউসুফ প্রভাষক এর রচনায় ফুটে ওঠে মানুষের এই দীর্ণ রূপ । একের পর এক কবিতায় কবি সমাজের বুকে প্রতি মুহূর্তে সংঘটিত এমন সব অনাচার, অত্যাচার, শোষণ, নিপীড়ন এর কথা তুলে ধরেন । তুলে ধরেন সমাজের অসহায়তার কথা । যেখানে এই ঘটনাগুলির কোনো বিচার হয় না । অপরাধীরা শাস্তি পায় না । শাস্তি পায় না কারণ সমাজের শক্তিশালী অংশই এইসকল অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে ।
যাত্রাদলের বিবেক চরিত্রের মতো একের পর এক কবিতায় সমাজের চোখ খুলে দেবার জন্য কবি এক একটি প্রসঙ্গ তুলে সমাজের বুকে ঘটে চলা এইসব অনাচারের চিত্র তুলে ধরেছেন । উন্মোচিত করেছেন মানুষরুপী সেইসব শয়তানের প্রকৃত রূপ ।
'বিবেক' শীর্ষক রচনায় প্রশ্ন করেছেন জাতির বিবেককে । আজ মানুষের বিবেচনাবোধ কোথায় ? এতো সব অপকর্ম হচ্ছে । মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত হচ্ছে না কেন ? এতো এতো মানুষের ভিড়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে । তবু সমাজের বুকে কোনো প্রশ্ন নেই, প্রতিবাদ নেই । বাংলা জুড়ে মানুষ নামের পশুগুলো মারণ হোলিখেলায় মেতে উঠেছে । নর নারী নির্বিশেষে মানুষকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে । শিশু থেকে কিশোরী - কারোরই নিস্তার নাই।
বিবেক আজ কোথায় ? কোন্ ঘোর নিদ্রায় সে শায়িত ? আর কতোগুলি মা বাবার বুক খালি হলে সে জেগে উঠবে ? এই নিষ্ঠুর বাংলায় আজ বিবেকের অভাব বড়ই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে ।
নিরাপত্তার ভীষণ অভাব অনুভূত হচ্ছে । ভরসা, বিশ্বাসের কোনো জায়গা নেই । এই নিরাপত্তার অভাব সবচেয়ে বেশি অনুভব করছেন নার্রীরা ।
যে সমাজে নারীর মর্যাদা নেই সেই সমাজ নিজেকে উন্নত বলে দাবি করতে পারে না । কারুর কাছেই নারী আজ নিরাপদ নয় । না আলেমের কাছে, না জালেমের কাছে । বিদ্বান ব্যক্তি, তথাকথিত খারাপ লোক সকলের কাছেই নারী বিপন্ন । ঘরে, বাইরে সর্বত্রই শ্বাপদের বিচরণ । প্রশাসন, নেতা তাঁরাও নারীর নিরাপত্তার প্রশ্নে সদর্থক ভূমিকা নিতে অক্ষম । সমাজের এই অমানবিক অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করে কোনো জবাব পাওয়া যায় না । অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না । সমাজ আজ বড়োই বিবেকহীন ।
আর কত মানুষকে পুড়িয়ে যে সমাজের বিবেক জাগ্রত হবে কবি জানেন না । কবে মানবিকতা, মনুষ্যত্বকে ধারণ করবেন মানুষ ? কবি আজ এই প্রশ্নের উত্তর চান । এই বর্বরতা ত্যাগ করে সমাজ কবে শিষ্টাচারে ফিরে আসবে জানতে চান কবি ।
কবে বাংলার মাটিতে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার সুনিশ্চিত হবে,সমাজপতিদের কাছে প্রশ্ন রাখেন কবি ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা । ।