সময়ের চলমান পথে ক্যালেন্ডারের শাসন । অখন্ড সময়কে দিন মাস বছর কালের মধ্যে বেঁধে মানুষ নিজের কর্ম ও বেঁচে থাকার সঙ্গে তাকে প্রাসঙ্গিক করেছে । তার এক একটি পর্ব যেন এক একটি অধ্যায় যা মানুষকে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যে প্রণোদিত করে । বারে বারে সেই পর্ব শেষ হয়ে নতুন পর্বের সূচনা হয় । দেশ কাল জাতি নির্বিশেষে নিজের গড়ে তোলা সেই পর্বের অন্তে মানুষ মূল্যায়নে বসে । মূল্যায়ন হয় তার প্রগতির ও তার অধোগতির । ফেলে আসা দিনগুলির ভুল ত্রুটি সংশোধন করে নতুন সময়ে নতুন করে চলার পথগুলিকে আরো আরো ফলপ্রসূ করে তোলার সংকল্প দৃঢ় হয় মনে ।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন আজ । স্বাগত ১৪২৬ ।
বিগত বছরের অপ্রাপ্তি, তার বেদনা ভুলে নতুন আনন্দে জেগে উঠেছে সমগ্র বাঙালি জাতি। বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের রূপময় চ্ছ্বটায় নতুন বছরকে বরণ করেছে সব বয়সের মানুষ। নতুন স্বপ্ন-প্রত্যাশায় উৎসব আর উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছে বাংলার মাঠ-ঘাট-প্রান্তর। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পুরনো জরা গ্লানিকে মুছে ফেলে, হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুন প্রেরণায় শুরু হলো আগামীর পথচলা।
কবি গৌতম রায় "বাঙালির নববর্ষ" রচনায় এই ভাব ও সুরটিকেই ধরতে চেয়েছেন । পূব আকাশে নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে । আজ থেকে শুরু হলো বাঙালির নববর্ষ ১৪২৬ । কবি আশা ব্যক্ত করেছেন নতুনের আগমনে পুরাতনের গ্লানিময় স্মৃতি মুছে যাক । স্মরণে থাকুক শুধু তার গৌরব ও মর্যাদার দিকটি । বাঙালি সৃষ্টিশীল কর্মে মেতে উঠুক । প্রত্যেকে পরস্পরকে এই কর্মে উৎসাহিত করুন ।
বাঙালি প্রতিভাধর জাতি । সেই প্রতিভার চ্ছ্বটা উজ্জ্বল তারা হয়ে জগতকে আলোকিত করুক ।
বাঙালি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন লড়াকু জাতি । স্বাধীনতা আন্দোলনে তার অবদান কখনও ভোলার নয় । সাহিত্যের জগতে রবীন্দ্রনাথ চিরকাল বাঙালির মনে বিরাজ করবেন । জগদীশচন্দ্র বসুর আবিষ্কার নতুন দিশা দেখিয়েছে বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ রচনায় । বিবেকানন্দের অমৃত বাণী মানুষের সেবায় নিয়োজিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী।
ঐতিহ্যশালী বাঙালি জাতি আজ নতুন বাংলা বছরের দিনে পুরনো গৌরব সাথে নিয়ে আগামীর পথে চলার জন্য সংকল্পবদ্ধ ।
কবিকে জানাই নতুন বছরের শুভকামনা ।