ঋতু প্রকৃতির খেলা । সময়ের পরিবর্তনে ঋতু পাল্টায় । প্রতি ঋতুর নিজ রঙ । প্রতিটি রঙের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ । মানুষ নিজের মনের রঙে প্রকৃতির রঙকে মিলিয়ে দেখে । মন রঙিন থাকলে প্রকৃতির রঙ তার চোখে পড়ে । সেই অনুসারে মন নেচে ওঠে । জগতের আনন্দযজ্ঞে সে নিজেকে আমন্ত্রিত মনে করে এবং মন ভরে সেই আনন্দ নিজে উপভোগ করে এবং অপরকেও আনন্দ দান করে ।
কিন্তু মানুষের মন রঙিন থাকে কখন ? কখন তার মনে খুশির ছোঁয়া থাকে ? যখন তার প্রিয়জন, তার মনের মানুষ তার সঙ্গে থাকে । সে সঙ্গে থাকলে প্রতিটি ঋতুবৈচিত্র্য তার আনন্দভান্ডার নিয়ে তাকে আকর্ষণ করে, আমন্ত্রণ করে । প্রিয়জনকে নিয়ে সে সেই আনন্দযজ্ঞে সামিল হয় ও জীবনকে ভরপুর উপভোগ করে । কিন্তু প্রিয়জন যদি সঙ্গে না থাকে তাহলে তার মন এতটাই বিমর্ষ থাকে যে তখন তার কিছুই ভালো লাগে না । প্রকৃতির সব রঙ, আনন্দের সব আয়োজন তার কাছে নিরর্থক হয় ।
কবি শ্রী সেনগুপ্ত "বসন্ত জাগ্রত দ্বারে" রচনায় এমনই এক মনের বেদনা উপস্থাপিত করেছেন যার প্রিয়জন একবার গিয়ে আর ফিরে আসে নি । তারপরে ঋতুর পরে ঋতু এসে গেছে, প্রতিটি ঋতু তার রঙবাহারে মানুষকে আনন্দ দান করেছে, প্রিয়জনকে সঙ্গে পাওয়া খুশি মানুষজন সেই আনন্দে অংশ নিয়েছে । কিন্তু নিজের মনের মানুষের বিরহে কাতর মানুষটি সেই আনন্দে সামিল হতে পারে নি । শীত এসে ফিরে গেছে, রঙবাহার বসন্ত এসেছে । এক গা শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার গয়না চাপিয়ে প্রকৃতি নিজেকে সাজিয়ে তুলেছে । এই বিরহী মানুষটির কাছেও সেজে ওঠার আহ্বান এসেছে ।
কাজললতা পাখিদের দৌরাত্ম বেড়েছে । আনন্দযযজ্ঞে তারাও সামিল । গাছেদের পাতায় পাতায়, বনে বাদারে তারা আনন্দ করে চলেছে । কিন্তু বিরহী সেই মানুষটি এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত । তার প্রিয়জন না এলে তার জীবন, যৌবন অর্থহীন ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !