শত সহস্র বছর কতো বিভিন্ন জন্ম পেরিয়ে মানবজন্ম জোটে l মানবজন্ম লাভ করার পর অনেক সম্ভাবনার দরজা খুলে যায় l সেই সম্ভাবনা অনেকের ক্ষেত্রে সাকার হয়ে ওঠে l তার জন্য প্রয়োজন পরিশ্রম, সাধনা, যোগ্যতা, ভাগ্য ইত্যাদি অনেক কিছুর সংযোগ l এই সংযোগের দ্বারা সামান্য মানবজীবন অসামান্য হয়ে ওঠে l যাঁদের ক্ষেত্রে এই সংযোগ সম্ভব হয়ে ওঠে না, তাঁদের কাছে মানবজীবন একখন্ড কাঁচা মাটির দলা হয়ে থেকে যায় l কবি রুহুল আমীন রৌদ্র "একখন্ড কাঁচা মাটি" শীর্ষক রচনায় এই বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন l
যেমন মাটি, তেমন মানবজীবন সম্ভাবনাময় l মাটি যেমন উর্বরা হয় তেমনই সেই জমিতে ভালো ফসল ফলে l কিন্তু মাটি উর্বরা হলেই শুধু হয় না, সেখানে সময়মতো কর্ষণ করার বিষয় থাকে, জলের ব্যবস্থা করার বিষয় থাকে, জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হয়, আনুষঙ্গিক আরো অনেক বিষয় থাকে l তবে জমিতে ভালো ফসল হয় l একইভাবে, মানবজন্ম নিলেই হয় না l এক একটি মানবশিশু একেক রকম সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায় l কার মধ্যে কি সম্ভাবনা আছে সেটা বুঝে ওঠা এবং সেই অনুযায়ী তার বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশ রচনা করে দেয়া এবং সেই শিশুর দিক থেকে সদর্থক প্রচেষ্টা এই সব কিছুর ওপর নির্ভর করে সেই শিশুর জীবন সফলতায় পূর্ণ হবে কি না, জীবন সার্থক হবে কি না l জীবনের থেকে হীরকসম সফলতা অর্জন সম্ভব l
কিন্তু সব মানুষের জীবন তো সমান সার্থকতা পায় না l অনেকের জীবনই ব্যর্থ হয় l জীবন থেকে তাঁরা কয়লাসম বিবর্ণ ব্যর্থতাই পান l জীবনের নানা স্তরের পরতে পরতে নেতিবাচক নানা অভ্যাস কর্ম ইত্যাদি কারণে তাঁরা জীবনকে সফল করে তুলতে পারেন না l এদিকে বিদায়বেলা চলে আসে l শেষ পর্যন্ত তাঁরা দেখেন জমার ঘরে শূন্য l
সোজা কথায় জীবনরূপ খনি খনন করে সেখান থেকে কেউ পান কুচকুচে কালো কয়লা, কেউ পান উজ্জ্বল হীরকখন্ড l সেটা নির্ভর করে সেই ব্যক্তির পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ওপর l

কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা l