যুগযন্ত্রণার ছবি ফুটে উঠেছে কবি সহিদুল হক এর "আহত হরিণ" রচনায় l
একটা সময় যখন সৃজনশীল সৃষ্টিতে নানাভাবে বাধা আরোপ করে তার প্রকাশের পথ রুদ্ধ করে দেয়া হচ্ছে l একটা বন্ধ্যা যুগের মধ্যে দিয়ে চলেছে মানুষ l আহত হৃদয়ে নানা ভাবের জন্ম হচ্ছে l কিন্তু সহমর্মিতার অভাবে সেই ভাব শুকিয়ে যায় l শীতল সম্পর্ক সৃষ্টি আবাদে ব্যর্থ হয় l যে অপার সৃষ্টি সম্ভাবনা ছিল তা প্রকাশিত হয় না l রত্নরাজি ভেতরে ভেতরেই গুমড়ে মরে l সময়টাই এত খারাপ যে মানুষ তাকে সামলে উঠতেই নাকাল হয়ে পড়ে l
এমন এক রুক্ষ অনাবাদী যুগে আটকে পড়ে মানুষ l তার থেকে বেরিয়ে যাবার সুযোগও সীমিত l সৌন্দর্যের পলাশবনেও একই অবস্থা l সেখানেও মড়ক লেগেছে l সুন্দর যা কিছু সৃষ্টি হতে পারত, নানা বিধিনিষেধ, প্রাচীরের আড়ালে সেটাও নিরুত্সাহিত l কাঁটা তারের বেড়ায় প্রতিভারা সব আটক l ভাবের আদানপ্রদান নানা প্রতিবন্ধকতায় আচ্ছন্ন l মানুষের ব্যথা মানুষের কাছে পৌঁছয় না l
অথচ শুরুতে সব কিছু সম্ভাবনাময় ছিল l সৃষ্টির আনন্দে মেতে ওঠার পরিবেশ ছিল l তার প্রস্তুতি ছিল l কিন্তু সভ্যতা একটু এগুতেই মানুষে মানুষে বিভেদ এল l সম্পর্কে এল শীতলতা l শক্তিমানের দাপটে দুর্বলের বাঁচা অসহনীয় হয়ে পড়ল l মানুষের স্বাভাবিক সৃজনে এলো হাজার বাধা l
মিশকালো আচরণবিধি, অপশাসনের মেঘ জাপটে ধরল সময়কে l শাসকশ্রেণী ভীষণ রকম প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওত পেতে থাকলো সব সৌন্দর্য্যকে, সব মৌলিক সৃজনকে জখম করার জন্য l কাজের ফাঁকে ফাঁকে চারণভূমির হরিণকে আহত করতে লাগলো তারা !
সুন্দর জীবনমুখী রূপক কবিতার জন্য কবিকে জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা !!