কবিতাটির শেষে আইরিশ নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প লেখক জর্জ বার্নার্ড শ এর কথাগুলি যেন কবিতাটির বক্তব্য স্পষ্ট করেছে l
"জীবনে দুঃখী হয়ে ওঠার রহস্য হলো...
আপনি সুখী না দুঃখী ভাবতে পারার মত সময় থাকা।"
অর্থাৎ জীবনে সুখ বা দুঃখ প্রকৃত জীবনযাপনে নয়, ভাবনা থেকে মেলে এবং সেটা তখনই মেলে যখন এরকম করে ভেবে ওঠার মতো যথেষ্ট সময় হাতে থাকে l যার এই সময় নেই, যাপিত জীবন সম্বন্ধে তার সুখ বা দুঃখের বোধ নেই l
কবি আনোয়ার পারভেজ শিশির এর হাতে এরকম সময় রয়েছে l তাই কাগজ কলম নিয়ে তিনি ভাবতে বসেছেন জীবন থেকে তিনি কি পেয়েছেন আর কি পান নি - কতোটা সুখ পেয়েছেন আর কতোটাই বা দুঃখী হয়েছেন l "অহর্নিশ ভালোবাসা" শীর্ষক রচনায় সেই ভাবনার কথা মেলে ধরেছেন কবি l
কবির হাতে অফুরন্ত সময় l তাই প্রিয়তমাকে নিয়ে তিনি ভাবনার বাসর সাজিয়েছেন l এই ভাবনায় তিনি পাচ্ছেন যে প্রিয়তমার প্রতি তাঁর ভালোবাসায় কোনো খাদ নেই, কোনো বিরতি নেই l তাঁর হাতে যতোটা সময় ছিল, নির্নিমেষে তার সবটুকু তিনি তাঁর প্রিয়তমাকে ভালোবেসে ব্যয় করেছেন l এবং কাজটিকে সময়ের সদ্ব্যবহার বলেই তিনি মনে করেন l প্রেম ভালোবাসার বিষয়ে কখনো অলসতা তিনি করেন নি l ফলে তিনি জীবনকে উপভোগ করেন নি, জীবনে কিছু করেন নি এমন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ায় না l সুতরাং এবিষয়ে তিনি দণ্ডিত হতে পারেন না l
কবি অহর্নিশি তাঁর প্রিয়াকে ভালোবেসেছেন l সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত তিনি তাঁর প্রিয়াকে ভালোবেসে গেছেন l প্রকৃতির নানা বিচিত্র স্থান এই ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে আছে l সমুদ্র ও আগ্নেয়গিরির গভীর গোপনতম প্রাঙ্গণ, গাছের পাতা, পথের ধুলো, নির্জন কাঁশবন - সর্বত্র তাঁদের ভালোবাসার অনু পরমানু ছড়িয়ে আছে ও চিরকাল থেকে যাবে l
কবি ভেবে দেখেছেন জীবনে তিনি যা পেয়েছেন, না পাওয়ার চেয়ে তা ঢের ঢের বেশি l প্রিয়তমাকে ভালোবেসে একদিন দেউলিয়া হতে চেয়েছিলেন তিনি l এক জীবনের ভালোবাসার অভিজ্ঞতায় তিনি বুঝেছেন ভালোবেসে কেউ কোনদিন দেউলিয়া হয়না, বরং প্রাপ্তির ঘরে জমা হয় অনেক কিছু l অন্তত কিছু না কিছু কপালে জুটবেই l
যেমন কবির জুটেছে এক মহাকালসম প্রেম, প্রেমের সঙ্গী l কবি তাঁর হাতের সমস্ত সময় ধরে তাঁর প্রিয়তমাকে আদিগন্ত ভালোবেসে যাবেন l কিছুতেই এ ভালোবাসার শেষ হবে না l ভালোবাসা চালিয়ে যাবার মতো সময় সর্বদাই তাঁর হাতে থাকবে l
অনন্ত প্রেমের সুন্দর কবিতার জন্য কবিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন !!