মানুষের জীবনে চাওয়া পাওয়ার বহু অন্তর থেকে যায় । সে চায় মহত্তম কিছু সৃষ্টি করতে । তার সৃষ্টির মাধমে সে ভবিষ্যৎকে মহান করে গড়ে তুলতে চায় । কিন্তু জীবনের যে অভিজ্ঞতা, যাকে ভিত্তি করে কবির সৃষ্টিরা বেড়ে ওঠে, সেই অভিজ্ঞতা কবিকল্পনাকে চালিত করার ক্ষেত্রে কাঙ্খিত সহায়তা দেয় না সবসময় ।
কবি শাহাদাত চৌধূরী তাঁর "আগামীর ঘ্রাণ" কবিতায় বলছেন অন্তরের গহীন জমিতে তিনি যে কল্পনার বীজ রোপন করেছেন, তার থেকে সৃষ্টির যে প্রকাশ আসছে, তার মধ্যে উদ্ভাবনী কোনো নতুনত্ব নেই । সৃজনশীল কোনো মহত্তর ভাবনা নেই । মনের সবুজ কোমল প্রকাশ নেই । কেন এমন হয় ?
কবির ভাবনা বলছে তাঁর জীবন অভিজ্ঞতা এর জন্য দায়ী । জীবনের পথে এতটা হাঁটার পরও তিনি দেখছেন তাঁর সৃজনশীলতার ভান্ডার শূন্য । দিনে দিনে বেলা বেড়ে গেছে । জীবনদিবসের পড়ন্ত বিকেলে তিনি দেখছেন জীবন ঝুড়িতে কেবল কষ্ট বেদনার জড়াজড়ি। বিফলতার দীর্ঘশ্বাস । আনন্দরস সৃস্টির তাঁর সৃজনশীল প্রয়াস যে কারণে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে । তিনি চেয়েছেন বিজয়ের পতাকাকে তুলে ধরে বিজয়ের গান গাইতে । যাঁরা জয়ের পতাকা নিয়ে ছুটে চলেন সেই সকল কবিদের বন্দনা করতে চান কবি । নিজের স্মরণে মননে তাঁদের স্থান দিতে চান । তাঁর সৃষ্টিতে তাঁদের মহিমা ধরে রাখতে চান । অনেকটা পথে হেঁটেছেন তিনি । জীবনের বাকি পথ তিনি কোনো মোহ বা ভ্রমের শিকার হয়ে থাকতে চান না । বিমোহিত মনে বেড়ে ওঠা বিকশিত প্রাণের ঘ্রাণ শুঁকে নিতে চান প্রতি মুহূর্তে । তাঁর সৃষ্টিতে তিনি জীবনের এই বিকাশের কথা তুলে ধরতে চান ।
জীবনের নানা পর্বে যে মূঢ়তার শিকার হয়েছেন, সে সব অভিজ্ঞতার নেতিবাচকতাকে পিছনে ফেলে কবি মহাকাব্যিক সদর্থতার আনন্দ উৎসবের মহরতে সাজিয়ে তুলতে চান আগামীর দিনগুলিকে । সেই সোনালী রূপকথাসম ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন তিনি ।
যাপিত জীবনের ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতার প্রভাবকে অস্বীকার করে নিজ কল্পনাকে কাঙ্খিত পথে চালিত করার বিষয়ে কবি সংকল্পবদ্ধ হন ।
কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !