মা, পিসির কাছে পড়ার প্রাথমিক পাঠ শেষ করে
খোকা যেদিন প্রথম স্কুলে এলো
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে চোখ কপালে,
কি বিশাল স্লেট দেয়ালের গায়ে !
মায়ের বয়সের এক মহিলা, হাতে চক, ডাস্টার
সকলের নাম ধরে ডাকছেন,
আর থেকে থেকে "ইয়েস প্যাটাম" উত্তর l
এক বন্ধু জুটল "অনেক বাঘ সিংহ" নাম l
বাড়ি এলে মা ঠিক করে দেন -
দেয়ালে ঝুলছে ব্ল্যাক-বোর্ড
নাম ডাকার উত্তর হবে "ইয়েস ম্যাডাম" l
পরদিন স্কুলে গিয়ে জানা গেলো
বন্ধুটির নাম অনির্বাক সিংহ l
নতুন বছরে উঁচু শ্রেণীতে উঠল খোকা l
পড়ল চিন্তায়, ছোট হাত-পায়ে
উঁচু শ্রেণীতে সে পৌঁছুবে কি করে ?
নতুন ক্লাশে, প্রথম দিন-ই দেখল
নামেই উঁচু ক্লাশ, ঘরটা তো পাশেই l
একদিন স্কুলে সাধারণ জ্ঞানের ক্লাশ টেস্ট,
এক বন্ধুর খাতায় পাতা শেষ l
নিজের খাতা থেকে পাতা ছিঁড়ে
বন্ধুকে সাহায্য করল সে l
ফেরত দেবার কোন শর্ত ছিলো না l
কিন্তু পরদিন বন্ধুটি সাদা পাতা শোধ দিল l
সেই পাতায় কচি হস্তাক্ষরে
প্রণব বন্ধুকে নিয়ে রচনা লিখল খোকা l
শিরোনাম "প্রণবের দেয়া পাতা" l
উপসংহারে লিখল, "প্রণব ভালো ছেলে l
পাতা ফেরত দিয়েছে l কিন্তু অভিজিৎ যেমন
প্রণবের প্রয়োজনে পাতা দিয়ে সাহায্য করেছে,
প্রণব পাতা শোধ করেও অভিজিৎকে
তেমন সাহায্য করতে পারে নি l"
কোনো অভিজিৎ, কোনো প্রণব
চিরকাল ছোট থাকে না l
নতুন চোখে পৃথিবীকে দেখতে দেখতে
চোখ পুরনো হয়ে গেলে
পৃথিবীর সবকিছু গা-সওয়া হয়ে যায় l
তখন আর বিস্ময় জাগে না,
সব ব্যাখ্যা স্বাভাবিক মনে হয় l
কৌতুহল নেই, প্রশ্ন নেই, বিস্ময় নেই
সৃজনশীলতা কোথায় হারিয়ে যায় !