পারস্যের কবি শেখ সাদীর অনটন
পোশাকের মতো তাঁর গায়ে এঁটে ছিল
কোনভাবেই তা থেকে বেরোনোর উপায় নেই
বাড়িতেও চরম অশান্তি
অভিযোগের পাহাড় জমে ছিল স্ত্রীর কাছে
এতো বলতেন , গঞ্জনা দিতেন তবুও
কবি ছিলেন গাছের মতো নির্বিকার
বরং রাগছে না দেখে কবিপত্নী এক বালতি
জল এনে কবির মাথায় ঢেলে দিতেন  ;
মন খুব খারাপ হলে কবি বেরিয়ে পড়তেন
লোটা কম্বল বইবার ধকল ছিল না
আছে কী তাঁর যে বইতে হবে !
পায়ের একজোড়া জুতো পর্যন্ত ছিল না
দিনের পর দিন , মাসের পর মাস
তিনি হাঁটতেন , দুচোখ ভরে দেখেন
যা কিছু চোখে পড়ে , পাহাড় , নদী , গাছপালা
ফুল পাখি লতা সব কিছু দেখেন
আর বিস্ময়ে চোখ বিস্মিত হয় ।
একবার এইভাবেই হাঁটতে হাঁটতে
মিসরের রাজধানী কায়রোয় পৌঁছালেন
রাতে ঠাণ্ডা , বেলা যত বাড়ে
বালি তত গরম হয় , খালি পায়ে ফোস্কা পড়ে
দুপুরের নামাজ পড়ার জন্য
একটা মসজিদের আজান শুনে পা বাড়িয়েছেন
পাদুটো জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে
অন্তরের অন্তঃস্থলে কবির মনে উদয় হলো
হায় আল্লাহ তাঁকে একজোড়া জুতো কেনার টাকা
দেননি এমনই পোড়া কপাল
এমন সময় দেখেন একটা লোক
যার পাদুটো নেই , কোমরে চট জড়িয়ে
ঘেঁষটাতে ঘেঁষটাতে মসজিদের দিকে যাচ্ছে !
তখুনি কবির বোধোদয় : এতো অকৃতজ্ঞ আমি
আমার তো আল্লাহ তুমি দিয়েছো দুটি চরণ
ওই হতভাগার তো তাও নেই !