মায়ের দুধ খেয়েছি
ঋণ মেটাতে পারিনি এখনো
আমার চেতন জননীকে, আমার স্বর্ণবর্ণগুলিকে
পারিনি দিতে কোনো ন্যূনতম সম্মান
এখনো এই বাংলায় আমার মায়ের পা দুটিকে
ভাষামাটির গভীর কর্ষিত ক্ষেত্রে রোপণ করতে পারিনি
আজও স্নায়বিক স্পন্দনে হীরের দ্যুতিতে স্তুতি পায় “একুশ”
রক্তের অশ্রুতে জ্বলজ্বল করে ওঠে ভাষাবীরের অভীক শপথ
তবু এই বাংলায়
এই সোনার বাংলায়
আমার লাজুক বাংলায়
আমাদের রূপসী বাংলায়
আমরা ঘেন্না করি ভাষা মা-কে
প্রমিতের উল্টো পথে উপনিবেশের ঊর্বশী
উত্তর রেনেসাঁর শাঁস ছাড়াতেই মশগুল
আমার দেশে নেই কোনো ভাষা মা
আমার দেশে নেই...
শুধু দাসত্বের নতজানু নির্লজ্জতাকে নিয়ে
শুধু পরাধীনতার পাঁজর ভাঙা কঙ্কাল নিয়ে
কি বিচ্ছিরি উচ্চারণে-বানানে-ব্যাকরণে
কি যাচ্ছেতাই বলায়-কথায়-বিজ্ঞাপনে
বেতার-দূরদর্শনে কি প্যানপ্যানানি ন্যাকামোয়
আমরা একটু একটু করে ভাষার সুস্থ স্বাধীনতা
আর সুস্বাদু সম্মোহন বিস্মৃত হচ্ছি
মা হারালে আর কি থাকে বলো
মাটি হারালে শুধু নিঃস্ব নিরালম্ব এই শরীর
স্বাধীনতার চিতায় শুয়ে পড়ে...
মা... আমার বর্ণিল ভালোবাসা
আমার ক্ষত-বিক্ষত ভাষাকাশ
চলো একটু রক্ত ঝারাই... একটু আগুন
আর একটা “একুশ” ঐ আগুন সমুদ্রে সঁপে দিই...
নিংড়ে নিয়ে আসি আমার ভাষা
আমার দেশের ভাষা
আমার মাতৃভাষা।।