==================
সাহস এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি।
শান্ত সমাহিত নিস্তব্ধ
বুকে টগবগে ফুটন্ত লাভা
ভীষণ ক্ষুধার্ত, আগুনের লকলকে শিখা।
প্রবল আক্রোশে যখন বিস্ফোরিত হয়
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার এ তিলোত্তমা বসুন্ধরা।
সাহস সংক্রামক।
তারুণ্যের স্পন্দনে যে ছড়িয়ে পড়ে
ছাত্র জনতা, আবাল বৃদ্ধ বনিতা
শিশু, পঙ্গু, ভিক্ষুক, শিক্ষক, রিকশাওয়ালা
ইউনিভার্সিটি, কলেজ, স্কুল, কিন্ডার গার্ডেন, মাদ্রাসা।
এমন কি উর্দি পড়া বোবা কালা সিপাহী
ভেসে যায় সাহসের বন্যায়।
সাহস তাদের গিলে খায়
সাহস তাদের চিৎকার করে বলতে শেখায়
'মানি না, মানব না'।
সাহস হিংস্র বন্দুকের নলের সম্মুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায়
সাহস প্রিজন ভ্যানের সম্মুখে দাঁড়িয়ে রুখে দেয়
সাহস ছুটে বেড়ায় অলিতে গলিতে , চোখে মুখে , কথায়
সাহস ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে পড়ার আগে হা হা অট্টহাসিতে খোদার আরশ কাঁপায়
সাহস প্রবল শক্তিধর ঘূর্ণিঝড়, সুনামি, মহা ভূমিকম্প, মহা প্লাবন।
সাহস বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল
সাহস নুরালদীন, নূরহোসেন
সাহস আবু সায়ীদ,
সাহস আলজেরিয়ার বোয়াজিজি
সাহস জলপাই রঙের ট্যাংকের সম্মুখে চীন যুবক
সাহস অজেয় রক্তলাল ফিলিস্তিন
সাহস আমার পতাকা
সাহস ঘৃণ্য রাজনীতির জটিল চক্রে মুক্তির বারতা
সাহস আমার বছর বছর মুক্ত নিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকা।
সাহস আমার পঁয়ষট্টি হাজার গ্রাম
খেটে খাওয়া মানুষ, মাঝি, বাউল, হুজুর
পহেলা বৈশাখ, ঈদ, নবান্ন, পূজা অর্চনা।
ধীরে ধীরে জমবে আবার ধুলা
হিংস্র শ্বাপদেরা আবার ঝড়াবে রক্ত
ওষ্ঠাগত প্রাণ, ঠিকরে বেরোবে চোখ
বুকের কন্দরে ঘুমন্ত সাহস আবার জেগে উঠবে
আবার বেজে উঠবে রণ ডঙ্কা
আবার মিছিল, মিটিং, রক্ত, মৃত্যু
তারপর আবার প্রিয় স্বাধীনতা।
এভাবে যতবারই বিপন্ন হবে স্বাধীনতা
ঠিক ততবার।
ঠিক ততবারই জেগে উঠবে ছাত্র-জনতা।
সাহস দেখাবে পথ
সাহসই ছাত্র জনতা।
======================
(বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের অগ্নিঝড়া দিনগুলোর এক বিচ্ছিন্ন অনুভূতি মাত্র )