এসো হে বৈশাখ,
তুমি আসো না ঢাকের তালে, লাল শাড়ির ঘ্রাণে—
তুমি আসো ধুলোর ঘূর্ণি হয়ে,
চোখের পাতার ওপারে জমে থাকা মরিচিকার ভিতর দিয়ে।

তুমি আসো যেনো এক পুরাতন আয়নার ছায়া
যার ভেতর লুকানো থাকে মৃত আত্মাদের নিঃশ্বাস
শুকনো বটপাতার নিচে দাঁড়িয়ে থাকে
একটা মুখ, যার নাম নেই, চোখ নেই, শুধু আগুনের রেখা।

এসো হে বৈশাখ...এসো দেখে যাও
আজ বাতাসে কার কান্না?
তন্দ্রাচ্ছন্ন মাঠ পেরিয়ে আসে এক ঘোড়সওয়ার—
তার কাঁধে ঝুলে থাকে সময়ের ফাঁস,
তার চোখে—এক আকাশ ভাঙা স্নায়ু।

তুমি তো শুধু ঋতু নও, হে বৈশাখ
তুমি এক আদিম বিপ্লবের প্রেত
যে প্রতিবার জন্ম নেয় গলিত সমাজের মৃতদেহ ছিঁড়ে
যে বলে, ধ্বংসই সৃষ্টি
আবর্জনার মধ্যেই লুকায় নতুন পাতা।

এসো হে বৈশাখ,
আমার ভেতরের কাচভাঙা মানুষটাকে জাগিয়ে দাও
যে ঘুমায়—নিজের ছায়ার নিচে,
যে ভয় পায়—নিজের মুখ দেখতেও।

তুমি এলে,
আমার বুকের ভিতর যেন বাজে এক ভাঙাচোরা বাঁশি
সুর নেই, ছন্দ নেই— তবু তা-ই সত্য
যা কোনও মিথ্যার মুখোশ পড়ে না।
---------