সূর্য নেমেছে পাটে, গোধুলীর আনাগোনা
হাটছে দুজন মানুষ দ্রুতপদে
আধার নামার আগে পৌঁছতে হবে
ডেলফির বিরাট মন্দিরে।
মন্দিরের সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই এলো পূজারী
সুধাল, "কি চাও বাছা তোরা?"
"দেবতার কাছে জানতে এসেছি একটি বিষয়ে"
বলল, মধ্যবয়সী গ্রীক চেরেফোন।
"যাও অ্যাপেলের নিকট বল "
কুৎসিত মানুষটি এগিয়ে গিয়ে বলল,
"প্রভূ, আমি সক্রেটিস,
আমি কিছুই জানি না।"
"আমি চেরেফোন, হে সর্বশক্তিমান দেবতা,
আপনি বলুন গ্রীসে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী কে? "
আকাশ-বাতাস ডেলফির মন্দির প্রকম্পিত
"সক্রেটিস, সক্রেটিস, সক্রেটিস
যে নিজেকে জানে " দৈববাণীতে।
সত্যিই তিনি কি মহাজ্ঞানী গ্রীসে?
না অারও কেউ আছেন?
খুঁজতে বেরুলেন সক্রেটিস।
হতে পারেন কবিরা জ্ঞানী।
গেলেন তাদের কাছে
না, কবিরা জ্ঞানী নয়, এরা অজ্ঞ
তাদের অমর সৃষ্টি, বুদ্ধির ঝংকার
সেতো ঈশ্বরদত্ত শক্তি ও প্রেরণা।
তাহলে শিল্পী-কারিগর হতে পারে
তারা অনেক জানে যা আমি জানিনা,
সক্রেটিস ভাবে।
অাত্ম অহঙ্কারে বিভোর কবিদের মত এরা
আর এই ভ্রান্তিই তাদের অজ্ঞ করেছে।
তিনিই মহাজ্ঞানী, অনুধাবন হলো সক্রেটিসের
সে যা জানে সত্যি জানে
নেই তার এতটুকু অহঙ্কার
সে মানুষকে যুক্তি দ্বারা উদ্ধুদ্ধ করে
তিরিস্কারের দ্বারা তৎপর রাখে
মৌমাছির মত হুল ফুটিয়ে
জাগিয়ে তোলে সুস্থ ভাবনা।
এটাই তার অপরাধ
পাঁচশো এক জন বিচারকমন্ডলী দ্বারা বিচার হবে
এথেন্সের দেবতাদের অস্বীকার,
নতুন দেবতার প্রবর্তন,
যুবকদের ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করা
এই তার অপরাধ।
যার ফলে নেমে আসে দেবতার অভিশাপ।
দুইশ একাশি জন বিচারক সক্রেটিসের বিপক্ষে
বিচার মৃর্ত্যদন্ড, কাঁদল অনেকেই প্রতিবাদহীন
মিথ্যা অভিযোগে তাকে মরতে হল হেমলেক বিষ পানে।