"তোমাকে আমার ভালো লাগে, প্রেম করার মতো"
চিঠিটা খুলে দেখল অতনু,
এর গায়ে শুধু এই কথাটাই লেখা।
অতনু অবাক!
রিনি মাত্র নবম শ্রেনিতে পড়ে।  
অতনু তার ইংরেজির গৃহ শিক্ষক।
সেই রিনি নাকি তার মাস্টারকে প্রেম পত্র দিল!

অতনু ব্যাপারটা চেপে গেল; ছেলেমানুষি ভেবে।

কয়েকদিন পর

"দাদা ! কি সুন্দর লাগছে তোমাকে, পড়েছিলে ওটা"
রিনির প্রশ্ন শুনে অতনু ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলে--
"কি পড়ার কথা বলছো। তুমি পড়া শিখেছ। আজকে তোমার বিপদ আছে"
রিনি খানিকটা ঘাব্‌ড়ে গেছে, আবছা চোখে দেখছে অতনুকে।

এক সপ্তাহ পরে রাস্তার মোড়ে দুজনের দ্যাখা।
সাইকেল থেকে নেমে সোজা অতনুর চোখে চোখ রেখে রিনি বলছে,
"এ কয়েকদিন আসোনি কেন? আজকে আসবে কিন্তু, প্লিজ"

আসলে, রিনির মতিগতি তার বাবা বুঝে গেছে,
তাই আর পড়াতে হবেনা বলে গোপনে অতনুকে ডেকে এনে
তার বাবা বলে দিয়েছে যে-
" ওর বয়স কম তো, ইনফেচুয়েশন হয়েছে। তুমি না আসলে ওসব ঠিক হয়ে যাবে"

এখন নতুন এক দাদা এসে ইংরেজি পড়ায়।  
এই বিষয়টা অতনুর ভালো লাগেনি
সে একে অপমান হিসেবে নিয়েছে।
অতনু ভেবে নিলো হয়তো সে বেকার ছেলে বলে
রিনি যেন তার প্রেমে না পড়ে, সে জন্যই তার বাবার এই মত।
এই ইনফেচুয়েশন কথা হচ্ছে তার নির্ঘাত অজুহাত, ছুতা।

এক মাস পর

অতনুর চাকরির অফার এসেছে।  
কয়েক মাস আগে সে এক চাকরির ইন্টরভিউ দিয়েছিল
এই চাকরি তার ফল।

অতনু সোজা রিনির বাড়িতে।
তখন নতুন দাদা রিনিকে পড়াচ্ছে।  
"কি রিনি কেমন আছো?"
"কাকা কই, ডাকো না একটু?"
নতুন মাস্টার অতুনুকে দেখে প্রশ্ন করে--
"এতদিন পরে হটাত কি মনে করে এখানে আসা?"
অতনু কিছুটা আনন্দ ও কিছুটা রসিকতায় বলে উঠলো-  
"এ তুমি বুঝবে না, প্রেম, প্রেমের ব্যাপার, ও আমাকে ভীষণ ভালবাসে গো"
অবাক চোখে নতুন দা অতনুর চোখে চোখ রেখে বলছে-
"মানে!  তোমাকেও? এই দেখো। ও আমাকে এটা দিলো।"  
একটা বাজ করা কাগজ নতুন দা অতুনুকে ধরিয়ে দিলো।
অতনু কাগজটা খুলে দেখে তাতে লেখা
"তোমাকে আমার ভালো লাগে, প্রেম করার মতো,  
কাউকে বলবে না কিন্তু। আমি কাউকে বুঝতে দেবো না "
অতনু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে ফিসফিস করে বলছে-
"ইনফেচুয়েশন?!"