সমুদ্রমন্থন
(সমুদ্র আমাকে যেভাবে চেনে)
প্রবল ইচ্ছে হচ্ছে সাগরের পাড়ে বসে মেঘলা আকাশ আর উত্তাল ঢেউ দেখতে,
সাগরের সাথে কথা বলতে।
অবশ্য সম্পূর্ণ একা সাগরের পাড়ে কখনো থাকিনি।
কোন মানুষ ছিলোনা, ছিলো দুইটা কুকুর।
একজন বেশ দূরে দূরে গিয়ে টহল দিচ্ছে।
অন্যজন আমার সামনে ঘুরঘুর করছে আর আমার কথা শুনছে।
আমি একটা গান ধরলাম, কাছের জন থেমে গেলো।
মনোযোগ বাড়িয়ে গান শুনছে।
'চোখটা এতো পোড়ায় কেনো, ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও.…..'
আমি মাঝে মাঝে চুকচুক করে মদ খাচ্ছি।
নেশাটা বাস্তবিক, মাতাল হচ্ছিনা কিন্তু খুব আয়েশ লাগছে।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ভালো লাগছে শুধু সিগারেট ধরাতে সামান্য সমস্যা হচ্ছে।
আমি গা এলিয়ে শুয়ে পড়ি, একটা লম্বা টান দিয়ে কুকুর সাহেবকে বলি,
'বুঝলি! জীবন গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মতোন। কিছুই ঝড় ঝড়িয়ে পড়েনা।'
শুনে ব্যাটা মাথা নাড়লো। বুঝলাম তার কথাটা পছন্দ হয় নাই।
শুয়া থেকে উঠে এবার হাটা শুরু করলাম।
বরাবর সমুদ্রের দিকে।
আমি যতই সমুদ্রের কাছে যাই কুকুরটার পায়চারী বাড়তে থাকে।
কোমর পর্যন্ত যাওয়ার পর কুকুরটা তারস্বরে ডেকে উঠলো। দৌড়ে তার অন্য সাথীটি তার কাছে চলে আসলো।
আমি প্রায় গলা পর্যন্ত চলে গেলাম, সিগারেটটা একটা বড় ঢেউয়ে নিভে গেলো। শেষ টানটা দেয়া হলোনা।
এখন দুই বন্ধু মিলে খুব ডাকছে।
আমার সমুদ্রে মিশে যাওয়ার আনন্দে নাকি অল্প সময়ের বন্ধু হারানোর শোকে তা বুঝা যাচ্ছেনা।
এখন মনে হচ্ছে অন্য প্রাণীদের ভাষা বুঝতে পারলে ভালোই হতো।
হঠাৎ একটা বড় ঢেউ এলো, আমার মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো অনেক জল।
নোনতা বিদখুটে কালো জল।
কেনো জানি পৃথিবীর সকল মায়ার চেয়ে কুকুরটার জন্য মায়া বেশি লাগছে।