প্রিয়ন্তি
মায়া মানুষকে মুগ্ধ করে, মায়া মানুষকে অন্ধ করে, মায়া মানুষকে পাথরের মতো শক্ত করে।আমারও হয়েছে তাই। আমি আজও তোমার পথ চেয়ে বসে আছি। এ বসে থাকা মানে তোমাকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নয়। আমরা-তো একটা ছাদের নিচেই আছি, পৃথিবী নামের ছাদ! এক ভুল সময়ে আমি তোমাকে ভালোবাসি। একটা ভুল আকাঙ্ক্ষা হৃদয়ে ধারণ করে পাথরচাপা শ্বেত ঘাসের কষ্ট নিয়ে আমি বেঁচে আছি। প্রবল বৃষ্টির মাঝে তোমার হাত ধরে হাটার আকাঙ্ক্ষা আর নাই, ফাল্গুনী পুর্ণিমার রাতে তোমার হাত ধরে জোছনা বিলাসের স্বপ্নের অপমৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। বর্ষায় কদম ফুলের মতো ভিজতে ভিজতে বৃষ্টির জলে এককাপ রং চা এখন উচ্চভিলাসীতা বটে। তোমার হাত ধরে বাশের ভেলায় চড়ে কাপ্তাই লেকে পাহাড় আর নীল জলের খেলা দেখার সাধ মরে গেছে। লেকের জলে আকাশ নামে, চাঁদ হাসে, কি সুন্দর দৃশ্য! এক কথায় অপূর্ব। কিন্তু ভালোবাসার বিষবাষ্প নিকোটিনের মতো আমার হৃদয় এমন বিষিয়েছে যে, খুব কাছাকাছি থাকলেও তোমার মুখ আমি আর দেখতে চাইনা, তোমার হাত ছুঁইতে চাই না ।
তবে তোমার কাছে যদি কখনো জীবন বিষাক্ত, গুরুত্বহীন, অভিশাপময় মনে হয়, একাকীত্ব যদি তোমাকে চেপে ধরে তাহলে তুমি আবার ফিরে আসো। সকল অগ্নুৎপাত বন্ধ করে হৃদয়ে হিমাঙ্ক নামাবো। কাঁটায় কাঁটায় ভরে যাওয়া হৃদয়ে গোলাপ বাগান গড়বো।গোলাপী গোলাপী একটা হৃদয় শপে দিবো তোমার হাতে। নিকোটিনে পুড়ে যাওয়া ফুসফুস গোলাপের সৌরভে সজিব হবে,স্নিগ্ধ নিশ্বাস তোমায় উপহার দিবো। সাইরেন বাঁজিয়ে বাজিয়ে চাঁদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে জোছনার প্লাবন নামাবো, জোছনার আলোয় আলোকিত করবো তোমার মুখচন্দ্রিমা। জোছনার প্লাবনে তোমার হাত ধরে সৈকতে হাটবো, মাঝরাতে জলকেলিতে মেতে উঠবো। পৃথিবীর সব কোলাহল থামিয়ে দিবো, পাখিরা শুধু গাইবে গান। লক্ষ কোটি জোনাকী পোকা মিটিমিটি আলো জ্বেলে তোমাকে অভিবাধন জানাবে। কষ্ট বৃক্ষের ডালপালা ছেটে দিবো, সুখ বৃক্ষের হায়াত জবাই করে দিবো। একদিন তুমি আমি জঙ্গলে যাবো, সন্ন্যাসী হবো। পাখিদের মতো গাইবো গান, সংসারের মায়া ভুলে সৃষ্টি তত্ত্বের ধ্যান কররো। পৃথিবীর সব কোলাহল ভুলে থাকবে, যান্ত্রিক সভ্যতার সব উৎপীড়নকে বলবো বিদায়। অনাদির পথে হাটবো দুইজন, সেই যাত্রাই হবে শেষ যাত্রা। ফিরো এসো প্রিয়ন্তি, ফিরে এসো।
ইতি
তোমায় মুগ্ধ কবি