কী তপ্ত রোদের মাঝে বর্ষা নামে,
আমি কেঁপে উঠি শীতের কাঁপুনিতে।
শ্রাবণের ঢল বয়ে শিউরে উঠে শরীর অকস্মাৎ!
আমি যন্ত্রণায় ছটফট করে নিবে যাই।
আমার গুমোট ধরা মেঘ
ঝরে গেল এক নিমেষে…
কী বিষাদ সুন্দর নিঃসঙ্গ এক দিনে
প্রেমের নাম দিলাম আমি বিষাদ।

এই বর্ষায়,
ঘন বর্ষার শীতল দুপুরবেলায়
আমার প্রেমিক নেই।
কী নীরব অথচ কোলাহলে চারপাশ,
গলিতে অলিতে কপোত-কপোতীরা দল বেঁধে নামে,
উল্লাস নেই অথচ কী রঙিন!
আমি নিঃশব্দে জলের মত গড়িয়ে টুপ করে নেমে পড়ি।
কেমন তেঁতো নিঃসঙ্গতা!
কী নিদারুণ সুন্দর অথচ জ্বরের মত ঘোর,
কেউ বসে আছে পাশে মমতায়,
কী এক হাতের স্পর্শে কেঁপে ওঠে চুলের গোড়ায় গোড়ায়,
কাঁথা মুড়িয়ে দিলো কেউ, কাঁপুনি থেমে গেল,
জলপট্টির ব্যবধান গেল কমে,
ঘোর কেটে গেলে দেখি পাশে
কেউ নেই।
ঘামে লেপ্টে ভিজে থাকা শরীর জড়তায় মুড়ে,
ক্লান্তি অবসাদে মিইয়ে থাকা বিকেলে,
এক পায়ের শব্দ এইমাত্র আমায় ছেড়ে গেল।
আমার আকুতি ওঁকে ছুঁতে পেল না।
আমি বোঝালাম আমার একলা লাগে ভীষণ রকম!
ওঁ বলে আমি স্বার্থপর হয়ে গেছি।
বন্দী করতে চাইছি ওঁকে কেমন!
ওঁ বন্দী হবার বিলাস করতে আনাড়ি…
ওঁ চলে গেল,আমি যেতে দিলাম।
আবার দিলাম না, যেটা কেউ জানে না।
উনুন না ধরালে লোকে বলে,
আমি অনাহারে আছি।
অথচ ওঁ আমায় না খাইয়ে ছাড়ে না,
লোকে ওটা জানে না।
জ্বর হলে ওঁ আসে,
সঙ্গ দেয় আমায় অচৈতন্যে,
চেতনায় এলে ঘোর হয়ে ফিরে যায়।
লোকে বলে আমি মরে পড়ে থাকব,
কেউ খোঁজ পাবে না!
অথচ ওঁর যাওয়া-আসার খবর,
কেউ জানেনা।
আমার বর্ষায় ওঁ ফিরে আসে,
শীতে আসে শত-সহস্রবার,
বসন্তে আসে অগণিত,
অচৈতন্যে কত কত বার।
লোকে বলে ওঁ আমায় ছেড়ে গেছে।

কী নিদারুণ সুন্দর অথচ কষ্টের মত ঘোর!
এই মত বর্ষায়,
একলা লাগে আমার, কিছু ভালো লাগে না,
ওঁ ফিরে ফিরে যায়, আর আসেনা আবার।